ভ্রমম্যাণ প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ
মোঃ আমিনুল ইসলাম
‘‘১৯১৪ সালে দরিরামপুর হাই স্কুলে নজরুলকে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে নজরুল নিজগুনে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পান এবং প্রথম স্থান অধিকার করে অষ্টম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন।
এখানে পড়াকালীন সময়ে নজরুলের ছোট্ট একটি ঘটনা না বললে নয়। সেখানে ক্লাসে আগে গরুর রচনা মুখস্থ লিখতে দেওয়া হতো। যেমনটি আমরাও লিখেছি গরুর চারটি পা আছে, লেজ আছে, গরু ঘাস খায়, গরু দুধ দেয় ইত্যাদি। এটাকে বলা হতো রচনা আমরাও তাই পড়েছি। নজরুল যে ক্লাসে পড়তেন সে ক্লাসে গরুর রচনা মুখস্থ করতে দেওয়া হলো। নজরুলতো মুখস্থ করার লোকনা, টিচার তাকে পিটাচ্ছেন।
শিক্ষক বলছেন, “তুই তো বাউন্ডেলে, বল গরুর রচনা মুখস্থ বল” নজরুল প্রশ্ন করে, “স্যার রচনা মানে কি স্যার?” স্যার বলে, “রচনা মানেকি, তুই মুখস্থ করছস কিনা বল, প্রথম আট লাইন? নজরুল বলে না স্যার। রচনা মানে কি আমি আপনার কাছে জানতে চাই।” শিক্ষক বলেন, “রচনা মানেতো বানানো। নজরুল বলে, বানানো হলে মুখস্থ করে বানানো হলো কেমনে?
তখন শিক্ষক বলেন, “বেয়াদপ নজরুল, রচনা বানানোর মুরদ তোর আছে নাকি? নজরুল বলে “হ্যাঁ স্যার বানাবো আমি বানাবো, তা গদ্যে বানাবো না পদ্যে বানাবো?” শিক্ষক বলেন, “বেয়াদব পদ্যে আবার রচনা হয় নাকি? নজরুল বলে নিষেধ কোথায় স্যার? দ্বিতীয়বার ধরা খেয়ে শিক্ষক বলেন, “ঠিক আছে গদ্যেই লিখ, পদ্যে লিখতে হবে না।
তখন নজরুল বলে “বাংলায় লিখব, না ইংরেজীতে লিখব স্যার? শিক্ষক বলে, “দুই অক্ষর ইংরেজি জাননা বাউন্ডেলে তুই ! তুই আবার ইংরেজিতে রচনা লিখবি! নজরুল বলে, “স্যার আমি লিখবো স্যার। তো স্যার কিসের উপর লিখবো। শিক্ষক বলেন, ঐতো গরু নিয়ে লিখবি। নজরুল বলে স্যার, আকাশে পাখি উড়ছে, গরু নিয়ে লিখবো কেন? তখন ত্রিশালের আকাশে শকুনিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঠিক আছে ঐ পাখির উপর লিখবি। নজরুল বলেন, দেন স্যার কাগজ। তাৎক্ষনিক বসে নজরুল সাত পৃষ্ঠা ইংরেজি রচনা লিখে দিয়েছিলেন। নজরুলের লেখা সেই রচনা ঐ স্কুলের বেরসিক শিক্ষকেরা একটুও সংরক্ষণ করেননি। ক্লাস সেভেনে পড়া একজন নজরুল ইংরেজিতে সাত পৃষ্ঠা রচনা লিখতে পারে তা স্কুল কর্তৃপক্ষের সংরক্ষণ করা উচিত ছিল।’’