আবু রায়হান মিসবাহ
সুন্দর এই পৃথিবীতে পিতা– মাতার বদৌলতে সন্তান জন্ম লাভ করে ঠিকই কিন্তু সেই সন্তানের জীবনকে সার্থক এবং সফল করে তোলার পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি হলেন শিক্ষক। শিক্ষক হলেন মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষক শিক্ষার্থীর বন্ধু, পরিচালক ও যোগ্য উপদেষ্টা। একটি জাতিকে উন্নত করার পেছনে থাকে একজন শিক্ষকের অবদান, যা জাতিকে উন্নত, সফলতার চূড়ান্ত শাখায় পৌঁছাতে সহায়তা করে। আমাদের সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। একজন আদর্শ শিক্ষকের পক্ষেই সম্ভব শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করা। একজন শিক্ষার্থীর কাছে তার মা-বাবার পরেই শিক্ষকের স্থান। সেদিক থেকে বলতেই হবে যে, শিক্ষক একজন শিক্ষার্থীকে শুধু জ্ঞান অর্জনেই সহায়তা করেন না, তিনি শিক্ষার্থীর মা- বাবার মতো অভিভাবক হয়ে ওঠেন। এমন শিক্ষকের কাছেই একজন শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। প্রকৃতপক্ষে এমন শিক্ষকরাই আদর্শ শিক্ষক। শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর, জ্ঞানের ফেরিওয়ালা। ত্যাগ ও নিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষকে ভালোবেসে অকৃপণভাবে মেধা ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারে শিক্ষক। আজ এমন একজন শিক্ষকের গল্প বলব যিনি ভাওয়াল গড়ের পিছিয়ে পড়া মানুষকে আলোর সন্ধান দিয়েছেন। বৃহৎ এই অঞ্চলের মানুষকে আলোকিত করা— আলোকিত মানুষ মোখলেছুর রহমান স্যার।
প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে সফলতার পেছনে যার দক্ষতা ও দিকনির্দেশনা থাকে তিনি হচ্ছেন শিক্ষক। সূর্যের মতো বিলিয়ে যান জ্ঞানের ভাণ্ডার। কালের বিবর্তনে শিক্ষাব্যবস্থার চিত্র বদলেছে সত্যি, তবে ব্যাতিক্রম মোখলেছুর রহমান। যিনি শাসন নয় বরং পরম যত্নে কোমলমতি শিশুদের মাঝে শিক্ষার প্রকৃত আলো জ্বালিয়ে গেছেন। বিশেষ করে ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের পরম মমতায় মূলধারার শিক্ষায় ফিরিয়ে এনে অনেককেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখনো তিনি অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে অত্র অঞ্চলে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন।
মুখস্ত আর জিপিএ নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থায় আমরা আটকে গেছি। বাড়ছে নম্বরের বোঝা তবে কমছে প্রকৃত শিক্ষা। এটার জন্য আমরা যেমন দায়ী, তেমনি অনেক অপেশাদার শিক্ষক নামধারী কিছু অশিক্ষক দায়ী৷ যারা নিজের অর্থ-বিত্ত বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ক্রমাগত পথ ভ্রষ্ট করাচ্ছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে। ধ্বংসের মুখে ফেলে দিচ্ছেন দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। এত কিছু স্বাভাবিকতার মাঝে কিছু অস্বাভাবিকতা থাকেই। সেজন্য পুরো শিক্ষক সমাজের দিকে আঙ্গুল তোলা বোকামির শামিল। কেননা মোখলেছুর রহমান স্যার এদের মধ্যে ব্যতিক্রম। আদর্শ মানুষ গড়তে তার মত আদর্শ শিক্ষকের বিকল্প নেই।
আমাদের সমাজে শিক্ষকতা হলো একটি মহান পেশা। আদর্শ শিক্ষক ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্বকে পাল্টে ফেলার সক্ষমতা রাখেন। শিক্ষকের সুশিক্ষাদানের ধারাবাহিকতায় সমাজ থেকে অজ্ঞতা, মূর্খতা বিতাড়িত হয়। প্রকৃতপক্ষে সুশিক্ষা আলোকিত সমাজ বিনির্মাণের প্রধান হাতিয়ার। মোখলেছুর রহমান স্যারের ব্রত হল জাতি গঠনে নিজের মেধা-মনন ও সৃজনশীলতাকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করা। যাতে করে একটি আলোকিত বুদ্ধিবৃত্তিক সৃজনশীল জাতি গঠন নিশ্চিত করতে পারে। সেটাই করে যাচ্ছেন আলোকিত মানুষ মোখলেছুর রহমান স্যার।
শিক্ষক মোখলেছুর রহমান এই অঞ্চলের সবার কাছে অনেক শ্রদ্ধার। কেননা তিনি আদর্শ জাতি গড়ার অন্যান্য এক কারিগর। প্রত্যেকটি মানুষের জীবনেই একজন আদর্শবান শিক্ষকের উপস্থিতি রয়েছে আর সেই একজনই হলেন মোখলেছুর রহমান। যিনি কোনো স্বার্থ ছাড়াই নিরলস পরিশ্রম করে ঐতিহ্যবাহী মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়কে অন্যান্য পর্যায়ে নিয়ে যেতে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।
আমাদের জীবনে পিতা মাতার পরই শিক্ষকের স্থান। শিক্ষকরাও আমাদের নিজ সন্তানদের মতোই দেখেন। মাতা-পিতা যেমন সন্তানদের সুন্দর মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব পালন করেন, একজন শিক্ষকও তেমনি শিক্ষার্থীর জীবনে পূর্ণাঙ্গ রূপে প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করে। সেদিক থেকে মহান এই মানুষটির অবদান অনস্বীকার্য।
জন্মের পর একটি শিশুকে বাবা-মায়ের পাশাপাশি শিক্ষকরা যা শেখান তাই সে রপ্ত করে। শিশুরা ধীরে ধীরে যেমন বড় হয় তেমন করে ধীরে ধীরে শিক্ষকদের প্রতি তাদের ভরসা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে দেখা যায়, বাবা-মায়ের থেকেও শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের দেখানো পথ বেশি করে অনুসরণ করছে। প্রতিটি মানুষ দেশের সম্পদ। এই সম্পদ তৈরি হয় শুধু শিক্ষক নামক মহান মানুষের হাতে। সমাজের সব অন্যায়, অপকর্ম, অসাধুতা সবই রোধ করা সম্ভব শিক্ষকের শিক্ষা দিয়ে। সেজন্য আলোকিত এই মানুষটি নিষ্ঠার সাথে প্রকৃত জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে গেছেন। আজকে প্রিয় স্যারের জন্মদিনে অন্তরের অন্তস্থল থেকে দোয়া ভালোবাসা ও শুভ কামনা রইল।