নিজস্ব প্রতিবেদক :
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড দেউলিয়া নয়; বরং সমৃদ্ধির পথেই হাঁটছে। চতুর্থ প্রজন্মের সর্বশেষ জীবন বীমা কোম্পানিটি মাত্র ৩ বছরে সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছে। গ্রাহক সংখ্যা, প্রিমিয়াম সংগ্রহ, জীবন তহবিল ও সম্পদ বৃদ্ধির উপাত্ত ও পরিসংখ্যান উল্লেখ্য করে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. শাহ্ জামাল হাওলাদার এ কথা বলেন। ২০ মে বিকেলে কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে তিনি বলেন, ২০২১ সালের ৬ মে সরকারের নিবন্ধন পেয়ে জীবন বীমা ব্যবসা কার্যক্রম শুরু করে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। ব্যবসা শুরুর বছরে মাত্র ৮ মাসে কোম্পানি ৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকার প্রিমিয়াম অর্জন করে। পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে প্রিমিয়াম ব্যবসা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকায়। তুলনামূলকভাবে ২০২৩ সালে তা অনেক বৃদ্ধি পায়। এ সময় অর্জিত প্রিমিয়াম ৪৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এর উপাত্ত অনুযায়ী ২০২৩ সালে ৩৫টি জীবন বীমা কোম্পানির মধ্যে ব্যবসায়ে আমাদের অবস্থান ছিল ২২তম। আর চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কোম্পানির সংগৃহীত প্রিমিয়ামের পরিমাণ ৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। বিদেশে (ওভারসিজ) ব্যবসা পরিচালনাকারী সরকারের একমাত্র জীবন বীমা কোম্পানি এনআরবি ইসলামিক লাইফের বিরদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চলছে। তা জানিয়ে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশ্ন রেখে বলেন, নিরীক্ষার পর যে কোম্পানির জীবন তহবিল ১৬ কোটি ৬৩ লাখ ৫১ হাজার ৫২৮ টাকা; সে কোম্পানি দেউলিয়া হয় কিভাবে? ব্যাংক-বীমা খাতে অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ মালিকদের নিয়ে গঠিত যে কোম্পানির জন্ম সবেমাত্র; তা দেউলিয়ার হবার প্রশ্নই আসে না।
মো. শাহ্ জামাল হাওলাদার বলেন, কোম্পানি গত বছরের অর্জিত ব্যবসায় ৪৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার মধ্যে মোট সম্পদের পরিমাণ রয়েছে ৪৪ কোটি ১৫ লাখ ৪২ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা (নিরীক্ষিত)। প্রশ্ন উঠেছে ২ কোটি ৮ লাখ ৫৭ হাজার ৮৫৪ টাকা গেল কোথায়?
তিনি জানান, নগদ ৯ কোটি ৮৫ লাখ ৯৫ হাজার ৬ শত টাকা দিয়ে ব্যবসা সফল কোম্পানি কর্মকর্তাদের জন্য ৩৪টি গাড়ি কেনা হয় এবং বাকি ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৮ হাজার ৯০২ টাকা ব্যয় হয়েছে অফিস সাজসজ্জা, আসবাবপত্র এবং কম্পিউটার ও যন্ত্রপাতি বাবদ। আশা করি আগামী ৫ বছর কোম্পানির গাড়ি কেনার প্রয়োজন হবে না। ব্যয় করার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণকারি প্রতিষ্ঠানের সুনিদিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। আমরা তা প্রতিপালন করে আসছি। আইডিআরএ’র নিয়ম অনুযায়ী ৬ বছর অবধি প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম ব্যবসার ৯৫ শতাংশ খরচ করা যাবে। গত সপ্তাহে পরিচালকদের ৩ কোটি টাকা পুনর্ভরন করা হয়েছে।
অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে কোম্পানিটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমার কাজে সন্তুষ্ট হয়েই কোম্পানির পর্ষদ আমার বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। সে মোতাবেক আইডিআরএ’র কাছে নিয়োগ নবায়ন অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সম্প্রতি। বেতন বৃদ্ধি করা বা না করার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের এখতিয়ার। প্রশ্ন উঠেছে আমার ছাড়পত্র ও প্রধান নির্বাহী পদে সময়কালের যোগ্যতা নিয়েও। ছাড়পত্রের কাগজপত্র দেখিয়ে তিনি বলেন, প্রায় ২৬ বছর জীবন বীমা পেশায় রয়েছি। এরমধ্যে ১৮ বছরের অধিক সময় পপুলার লাইফ, প্রাইম ইসলামী লাইফ, প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ এবং বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এ কাজ করেছি সাফল্যের সঙ্গে। তাই ছাড়পত্র নিয়েই এসেছি বর্তমান কোম্পানিতে। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পরের পদে ৩ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক হলেও আমার রয়েছে ৫ বছর ৯ মাস। আইডিআরএ যাচাই বাছাই করেই এ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী পদে আমার নিয়োগ অনুমোদন দেয়। কোম্পানির উন্নয়নের বিষয়ে অপর এক প্রশ্নে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহ্ জামাল হাওলাদার বলেন, ২০২৪ সালে কোম্পানির ব্যবসায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬২ কোটি টাকা। এরমধ্যে ৪০ থেকে ৪২ কোটি টাকা প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম; বাকি অংক নবায়ণ ব্যবসা। সামনের পর্ষদ সভায় কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন কাঠামোর প্রস্তাবিত সার্ভিস রুল অনুমোদন দেওয়া হবে। ২০২৬ সালের মধ্যে আমরা দেশের পুঁজি বাজারের গণপ্রস্তাবে (আইপিও) যেতে পারব বলে প্রত্যাশা করছি।