কুমিল্লা প্রতিনিধি
কৃষ্ণচূড়া নামটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে লাল রঙের অপরূপ পুষ্পের প্রতিচ্ছবি। তখন কৃষ্ণচূড়ার রংয়ে মনপ্রাণ ছুঁয়ে যায় সকলের। বর্ষায় মেঘলা আকাশের নিচে কৃষ্ণচূড়ার লাল মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি করে অবিরাম প্রকৃতিপ্রেম। যাদের প্রকৃতির প্রতি কোনো প্রকার ঝোঁক নেই, তাদেরও বাধ্য হতে হয় প্রকৃতির রূপের প্রশংসা করতে। এক কথায় বলতে গেলে, সৃষ্টি করছে প্রাণচাঞ্চল্য।
সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ বৃদ্ধি করছে সড়কের সৌন্দর্য। যানবাহনে যাতায়াতের সময় দুই ধারে যখন কৃষ্ণচূড়াগুলো সিন্ধ বাতাসে দোল খেতে শুরু করে তখন মনে হয় বাংলা জননী বুঝি সেজেছে অপরূপা রমণী হয়ে। মনের মাঝে যত প্রকার চিন্তাই বিরাজ করুক না কেন, কৃষ্ণচূড়ার দর্শনে বিলীন হয়ে যায় সব জল্পনাকল্পনা।
মুরাদনগর দুর্গা রাম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন গোমতী বেরিবাঁধ সড়ক, কোম্পানীগঞ্জ, বাঙ্গরা, ইলিয়টগঞ্জ, রামচন্দ্রপুর কিংবা হোমনা যাওয়ার সড়ক সকল স্থানেই দেখা মিলে ফুটফুটে গাছভর্তি কৃষ্ণচূড়ার। প্রকৃতির আকর্ষণে মুক্ত মেঘলা আকাশের নিচে সকাল-বিকাল ভিড় জমায় ছোট থেকে বড় সকল বয়সের মানুষ। তরুণ-তরুণীদের ছবি তোলার আহ্লাদে কৃষ্ণচূড়া গাছতলা পরিণত হয়েছে অঘোষিত ফটো শুটিং স্পটে।
মুরাদনগর কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলটি শুধু সৌন্দর্য বর্ধনে নয়, এই ফুলের রয়েছে ঔষধি গুণ। ফুলটি মানুষের মনের প্রকৃতি প্রেমের খোরাক মেটায়। ডেলোনিক্স রেজিয়া হলো কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম। গরমে গাছটি ছায়া দিয়ে মানুষকে আগলে রাখে। গাছটি শোভাবর্ধক গাছ হিসেবেই অধিক সমাদৃত।
মুরাদনগরের বিভিন্ন স্কুলের ছোট ছেলেমেয়েরা টিফিন টাইমে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাড়ির পাশে খালি জায়গায় বেড়ে উঠা গাছের নিচে ভিড় জমায় কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি ও পরাগরেণু সংগ্রহের জন্য। ফুলের পাপড়িগুলো বইয়ের ভাঁজে রেখে দেয়, মেয়েরা ফুলগুলো ব্যবহার করে খোঁপায়। ফুলটির পরাগরেণু নিয়ে খেলায় মজে উঠে কে আগে একে-অপরের হাতে থাকা পরাগধানী হতে পরাগরেণু ফেলতে পারে।