নিজস্ব প্রতিবেদক,ইমরান জামান কাজলঃ
আজ ০২ মে ২০২৪ খ্রিঃ, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার সকাল ১১:৩০ ঘটিকায় লবণচরা থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব-১২-৩২৬৪) একজন ব্যক্তি সন্দেহজনক কোন বস্তু বহন করে নিয়ে যাচ্ছে।
অতঃপর রূপসা ব্রীজ হতে জিরো পয়েন্টগামী মহাসড়কের সাচিবুনিয়া বিশ্বরোড মোড়স্থ মেসার্স সালমান ভ্যারাইটিস ষ্টোর এর সামনে পাঁকা রাস্তার উপর ইমাদ পরিবহন থামিয়ে কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; অতিঃ ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এ.জেড.এম তৈমুর রহমান; সহকারী পুলিশ কমিশনার (খুলনা জোন) গোপীনাথ কানজিলাল; লবণচরা থানার অফিসার ইনচার্জ মমতাজুল হক এবং এসআই(নি:) প্রদীপ বৈদ্য ও এসআই(নি:) মিহির কান্তি মন্ডল-সহ সঙ্গীয় ফোর্স, উপস্থিত বাসযাত্রী, সাংবাদিক ও স্থানীয় জনগণের সম্মুখে বাসটি তল্লাশি করা হয়।
এ সময় ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা গামী ইমাদ পরিবহনের বিভিন্ন স্থান এবং যাত্রীদের চেক করাকালে মোঃ আবু কালাম(২৪), পিতা-মৃত: নয়ন খান, পালিত পিতা-মোঃ আলী আহমেদ, মাতা-খাইরুন নেছা, পালিত মাতা-আশুরা বেগম, সাং-রামনগর লক্ষীপুর, থানা-বোয়ালমারী, জেলা-ফরিদপুর, এপি সাং-আইজিগেট পোস্তগোলা, থানা-সুত্রাপুর, জেলা-ঢাকা নামক এক ব্যক্তির আচরণ ও কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হয়।
অতঃপর উপস্থিত বাসযাত্রী, সাংবাদিক ও জনগণের সম্মুখে প্রকাশ্যে দেহ তল্লাশীকালে এক পর্যায়ে মোঃ আবু কালামের স্বীকারোক্তি মতে তার দুই পায়ে পরিহিত জুতার ভিতরে সুকৌশলে সাজিয়ে রাখা (৫+২)=০৭ (সাত) পিস স্বর্ণের বার, যার ওজন ৭৩৮.৫০ (সাতশত আটত্রিশ দশমিক পঞ্চাশ) গ্রাম, যার সর্বমোট মূল্য অনুমান ৭০,০০,০০০/-(সত্তর লক্ষ) টাকা উদ্ধারপূর্বক উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
উক্ত গ্রেফতারকৃত স্বর্ণ চোরা চালানকারী মোঃ আবু কালামকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জানা যায় সে দীর্ঘদিন যাবৎ এই রুটে স্বর্ণ পাচারের সাথে জড়িত। এর পূর্বেও সে এই রুট ব্যবহার করে স্বর্ণের চালান পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করেছে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে প্রত্যক্ষদর্শী উক্ত বাসের একজন যাত্রী মোহাম্মদ মনির বয়স (৪৩)আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদককে জানাই যে উক্ত ব্যক্তি ঢাকা হতে একজন সাধারণ যাত্রী হিসেবে H-1 সিটে বসে সাতক্ষীরা যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে রওনা হয়।কিন্তু আমরা বাসের অন্যান্য যাত্রীগণ বিন্দু পরিমাণ বুঝতেই পারলাম না তো ব্যক্তি একজন সোনা চোরাকারবারি।হঠাৎ করে আমাদের গাড়িটি খুলনার গল্লামারি মোড়ের সাছিবুনিয়া এলাকায় এসে পৌঁছালে আমাদের বাস্কে উদ্দেশ্য করে কেএমপি থানা লবনচড়া পুলিশের একটি অভিযানিক দল আমাদের গাড়িকে উদ্দেশ্য করে থামার জন্য সিগনাল দেয়। পরবর্তীতে আমাদের গাড়িটি রাস্তার এক পাশে গিয়ে একটি ভ্যারাইটিজ স্টোর দোকানের সামনে মেইন রাস্তায় দাঁড় করায়। এরপরে শুরু হয় পুলিশের চিরুনি তল্লাশি। প্রতিটি যাত্রীদের ব্যাগ ও পকেট তল্লাশি শেষে এক পর্যায়ে পুলিশ বাহিনী উক্ত সোনা চোরাকারবারি ব্যক্তি কে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। উক্ত সোনা চোরাকারবারির পায়ে জুতার পাদদেশ থেকে ৭পিছনের বার উদ্ধার করে অভিজানরত কেএমপি থানা পুলিশের একটি চৌকস দল। কেএমপি থানা পুলিশের চৌকস দলের এই অভিযান দেখে আমরা সকল যাত্রীগণ হতবাক ও হতভম্ব হয়ে যায়। আমরা বাসে আগমনরত সকল যাত্রীগণ বিন্দু পরিমাণ জানতে পারলাম না যে উক্ত ব্যক্তির পাদদেশে এত পরিমান শোনার বার রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, আজকেও ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে স্বর্ণের বার বাসযোগে সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো এবং সেখান থেকে স্বর্ণ সাতক্ষীরা বর্ডার অঞ্চল দিয়ে ভারতে পাচার করার উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। উল্লেখিত স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে আরও কে কে জড়িত আছে এবং কোথা থেকে স্বর্ণগুলো আনা হয়েছে।
কোথায় পৌঁছে দিবে সেই রহস্য উদঘাটনের জন্য গভীরভাবে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ঢাকা ও সাতক্ষীরা প্রান্তের আরও কিছু সংশ্লিষ্ট চোরাকারবারির নাম খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের হস্তগত হয়েছে। খুব শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ সংক্রান্তে গ্রেফতারকৃত স্বর্ণ চোরা চালানকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন ও তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
উক্ত সোনা চোরাকারবারীর বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ সংক্রান্তে গ্রেফতারকৃত স্বর্ণ চোরা চালানকারীর বিরুদ্ধে - The Special Power Act, 1974 এ 25 B(1)(A) রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে সোনা চরাচালানে তার নিজের দোষ স্বীকার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত সোনা চোরাকারবারি তার দোষ স্বীকার করেছে। উক্ত সোনা চোরাকারবারের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা যায় যে এই রুটে আরো অনেক সোনাচোরাকারবারি রয়েছে। এ সকল সোনা কারবারিদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিবে কে এমপি কমিশনার।
এবং পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য তাকে আগামীকাল খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসি আদালতে উপস্থিত করা হবে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ।