গাজীপুর
Advertisement
গাজীপুরের শ্রীপুরে তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী মনসুর মানিকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের তহবিলের প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড এনে অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষা অধিদপ্তরের চেয়ারম্যানের কাছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের চার সদস্য যৌথ স্বাক্ষরে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে এ অভিযোগ করেছেন।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়ার পর অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আলী মনসুর মানিক তড়িঘড়ি করে বিদ্যালয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৮ লাখ ৪৪ হাজার ২৫২ টাকা জমা দিয়েছেন।
Advertisement
অভিযোগকারীরা হলেন-অভিভাবক সদস্য মো. রিয়াজ উদ্দিন সরকার, মো. আকরাম হোসেন, আবুল বাশার শামীম ও শিক্ষানুরাগী সদস্য মো. নাসির উদ্দিন।
২০১০ সালে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়ের কোনো প্রকার কার্যক্রমের অডিট করা হয়নি, এমনকি বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ক্রয়-বিক্রয় অডিট কমিটিও করা হয়নি। পরিবারতন্ত্র কায়েম করতে তার স্ত্রী আয়েশা খাতুনকে সহকারী প্রধান শিক্ষক, নিকটাত্মীয় ইশরাক আহমেদ শাওনকে অফিস সহায়ক, সাহাদাৎ আলম দিপুকে কম্পিউটার অপারেটর, ভাগনি সুমী আক্তার এবং ভাগিনার স্ত্রী সাথী আক্তারকে অতিথি শিক্ষক হিসাবে বিদ্যালয়ে নিয়োগ দিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা নিয়োগ পাওয়ার পর এমএড করার জন্য স্কুল থেকে এক বছরের ছুটি নিলেও এমএড না করে বাড়িতে ব্যক্তিগত কাজে সময় কাটিয়ে স্কুল থেকে নিয়মিত বেতনাদি উত্তোলন করেছেন। প্রধান শিক্ষক যোগদানের পর থেকেই জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন এবং ফরম ফিলাপ বাবদ বোর্ডের নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা বিনা রসিদে আদায় করে স্কুলের ফান্ডে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
প্রধান শিক্ষকের কাছে বিদ্যালয়ের টাকা থাকা সত্ত্বেও গত ৮ মাস ধরে অন্যান্য শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়নি। বেতন চেয়ে অনেক শিক্ষক তার হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
প্রধান শিক্ষক এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশকৃত শিক্ষকদের নিয়োগ না দিয়ে, বেসরকারিভাবে তার মনগড়া শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে অর্থ আদায় করেছেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক যুগান্তরকে জানান, প্রধান শিক্ষক হিসাবে আমার কাছে টাকা থাকতেই পারে। কয়েকজন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে তিনি দাবি জানান।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও তেলিহাটি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল বাতেন সরকার যুগান্তরকে জানান, প্রধান শিক্ষককে বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও অডিট কমিটি করেনি।
প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের অনেক টাকা তার হাতে রেখেছেন। সম্প্রতি চাপ দেওয়া হলে বিদ্যালয়ের কোষাগারে কয়েক লাখ টাকা জমা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্রীপুর