জামিউল আহসান, স্টাফ রিপোর্টার :
ঠাকুরগাঁওয়ে অসুস্থ মায়ের জন্য ঔষুধ কিনতে গিয়ে ট্রাফিক পুলিশের ক্ষপ্পরে পরেন মোটরসাইকেল আরোহী। এ সময় কান্নাকাটি অবস্থায় হাত পা ধরে মাফ চেয়েও পুলিশ ইনচার্জের জরিমানা থেকে রক্ষা পায়নি সেই মোটরসাইকেল আরোহী। এমন একটি প্রায় ২৫ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পরে সোশ্যাল মিডিয়ায়।যা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা-সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বস্তরে।
গত রবিবার (৩১ মার্চ) ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ী এলাকার সোনালি ব্যাংক পিএলসি শাখার সামনে এই ঘটনাটি ঘটে।
এই সংবাদটি প্রকাশিত করার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত ভিডিওতে ভাইরাল হওয়া মোটরসাইকেল আরোহীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনার সময় এক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও সোনালি ব্যাংক পিএলসি শাখার সামনে মোটরসাইকেল আরোহী যুবক ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যকে বারংবার দুই হাত জোড় করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনুরোধ করছে জরিমানা ও মামলা না দিতে।
এ সময় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য পাশে থাকা ট্রাফিকের শহর ও যানবাহন পুলিশের ইনচার্জ আমজাদ হোসেনকে বলার জন্যে দেখিয়ে দেয়। এরপর ভুক্তভোগী মোটরসাইকেল আরোহী হাউমাউ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলতে থাকেন স্যার আমার ভুল হয়েছে, আমার মা খুবি অসুস্থ্য,শুধুমাত্র ঔষধ কেনার জন্য এসেছি, এবারের মতো মাফ করে দেন। এক পর্যায়ে যুবক ওই পুলিশ কর্মকর্তার দুই পা ধরে ক্ষমা চান।কিন্তু তাতেও ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জের মামলা থেকে মুক্তি পায়নি মোটরসাইকেল আরোহী।
মোটরসাইকেল আরোহীর কান্নার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় এরই মধ্যে সুষ্ঠু বিচার ও আইন প্রয়োগের বিভিন্ন মন্তব্য করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয়রা। ভবিষ্যতে যাতে আর কোন গাড়ি চালকের উপর এমন অমানবিক আচরণ করতে না পারেন সেদিকে খেয়াল রাখার আহব্বান জানান পুলিশ সুপারকে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকে কমেণ্টস করে জানিয়েছেন, কাজটি আসলেই ট্রাফিক পুলিশ ইনচার্জের কাছ থেকে কোন ভাবেই কাম্য নয়।
নুর জামান সিফাত নামে একজন লিখেছেন,এই সাধারন মানুষের জায়গায় মন্ত্রী কিংবা রাজনৈতিক দলের কেও হলে তাকে এতকিছু করতে হতো না আর লাইসেন্স ও লাগতোনা।
তিনি আরো বলেন,সময়ের দাবী ট্রাফিক ও পুলিশের গাড়ির কাগজপত্র দেখার নামে হয়রানি বন্ধ করা উচিৎ। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের শুভ দৃষ্টি কামনা করেন।
উল্লেখ্য যে,গত বুধবার (২৭ মার্চ) ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক তার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন কক্ষে জানান, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গত ৮ মাসে জেলায় সড়ক পরিবহন আইনে ৫১৫২টি মামলা হয়েছে এবং এ সব মামলায় জরিমানা আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৫০ টাকা।
মোটরসাইকেল আরোহীর বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) এর দায়িত্বরত কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন মুঠোফোনে জানান, আইন সবার জন্য সমান হাত পা ধরে মাফ চাইলে কি সমাধান পাওয়া যায়। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় ৫০০০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে নিশ্চিত করেন তিনি।