নূর ইসলাম রকি, খুলনা
৩১ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম | প্রিন্ট সংস্করন
বেকায়দায় পাইকাররা পোয়াবারো খুচরা বিক্রেতাদের
Advertisement
খুলনায় তরমুজের বাম্পার ব্যবসা করছেন খুচরা বিক্রেতারা। প্রতি কেজি তরমুজ পাইকারি বাজার থেকে ১০-১৭ টাকায় কিনে খুচরা বিক্রেতারা ২৫-৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। এতে খুচরা বিক্রেতাদের লাভ হচ্ছে দ্বিগুণ। রমজানকে কেন্দ্র করে এ ব্যবসা আরও জমজমাট হয়ে উঠেছে। কারণ ইফতার সামগ্রী হিসাবে তরমুজের বিকিকিনি সবসময়ই বেশি থাকে। বাজারে তরমুজের সরবরাহ বেড়েছে রমজানের মাঝামাঝি সময়ে। দাম কম হওয়ার পরও আগের তুলনায় বিকিকিনি কমে গেছে। ফলে কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। সরবরাহ বেশি থাকায় আড়তে মজুতও বেশি। কম দামে বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে। কিন্তু খুচরা বিক্রেতারা কম দামে কিনেও প্রায় দ্বিগুণ লাভে নিচে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন না। যার ফলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়লেও খুচরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোনো প্রভাব পড়েনি।
খুলনায় রমজানের শুরুতে প্রতি কেজি তরমুজ ৭০-৮০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে ২৫-৪৫ টাকা কেজিতে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। নগরীর কদমতলার পাইকারি বাজারের ৭০-৮০টি আড়ত থেকে প্রতিদিন ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। খুলনা নগরীসহ আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে এসব তরমুজ কিনে নিয়ে যায় খুচরা বিক্রেতারা। খুলনার সব থেকে বড় পাইকারি বাজারের তরমুজের সরবরাহ হচ্ছে ভোলা, গলাচিপা, পটুয়াখালী, বরগুনা, রাঙ্গাবালিসহ বরিশাল থেকে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণভাবে তরমুজের বিকিকিনি চলছে।
Advertisement
জিয়া চৌধুরী, ইব্রাহিম, মনিরসহ একাধিক তরমুজের ক্রেতারা জানান, তরমুজের দাম রমজানের শুরুর তুলনায় অর্ধেকে নেমে গিয়েছে। তবে কেজিপ্রতি তরমুজ না কিনে পিসপ্রতি তরমুজ কিনতে পারলে ভালো হতো। সংবাদে দেখা যায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় দাম ততটা কমেনি। তারা আরও জানান, ৯ কেজি ওজনের একটি তরমুজ কিনতে ৪০০ টাকার বেশি লাগে। যেটা সহনশীল নয়। ১০০-১৫০ টাকার ওপর কোনো তরমুজের দাম না হলে ভালো হয়। এ বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
পাইকারি বাজারের বিক্রেতারা জানান, ৫ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ ৬-৭ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭-৯ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১২-১৫ হাজার টাকায়। এতে করে তরমুজের ওজন প্রতি কেজি ১২ থেকে ১৭ টাকা করে পড়ছে। এ ছাড়া ২ কেজি ওজনের প্রতি পিস তরমুজ ৩০ টাকা, ৪-৬ কেজি ওজনের তরমুজ প্রতি পিস ৭০ টাকায়, ৬-৯ কেজি ওজনের প্রতি পিস তরমুজ ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যাতে করেও প্রতি কেজি তরমুজ ১৫ টাকার বেশি দাম পড়ে না।
আরও জানা গেছে, তরমুজ বিকিকিনি করতে আড়তদারদের টাকা, শ্রমিকের টাকা, যানবাহন ব্যয়সহ আনুষঙ্গিক কিছু ব্যয় থাকলেও ৯ কেজি ওজনের একটি তরমুজ পাইকারি ১২০ টাকা করে কিনে খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি ৪৫ টাকা করে ৪০৫ টাকায় বিক্রি করছে। এতে করে সব ব্যয় বাদ দিয়েও খুচরা বিক্রেতাদের লাভ হচ্ছে দ্বিগুণ। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে খুচরা বিক্রেতারা। তারা জানিয়েছেন, দোকান ঘর, বিদ্যুৎ বিলসহ আরও আনুষঙ্গিক খরচ আছে, যা সাংবাদিকদের সামনে বলা যাবে না। তবে বিকিকিনি আগের তুলনায় বেড়েছে বলে তারা দাবি করেছেন। দ্বিগুণ লাভের বিষয়ে তারা বলেন, সামান্য লাভ হয়, যা দিয়ে আমরা সংসার চালাই।
খুলনা সিটি করপোরেশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সানজিদা বেগম যুগান্তরকে বলেন, তরমুজের দাম আগের তুলনায় অনেক কমেছে। কেজিপ্রতি তরমুজ বিক্রির কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে কেউ করেনি। তবে বাজার মনিটরিংয়ের সময় আমাদের সামনে কেজিপ্রতি তরমুজ বিক্রি করার বিষয় সামনে এলে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।
খুলনা