অনলাইন ডেস্ক
২৪ মার্চ ২০২৪, ০১:৫৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল
ভারতের এনফোর্স ডিরেক্টরেটের (ইডি) লকআপে বন্দি আছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সেখান থেকেই তিনি প্রথম কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত ইস্যু করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, তিনি জেলে থাকা অবস্থায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব অব্যাহতভাবে পালন করে যেতে পারবেন কিনা?
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গৃহবন্দি করা হলে তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারেন। অন্যদিকে তার পদত্যাগ বা তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার উপায় খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে কি আরও কঠিন পরিণতি অপেক্ষা করছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ভাগ্যে!
Advertisement
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়ে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, শনিবার তিনি রাজধানীতে পানি সরবরাহ বিষয়ক একটি অর্ডার বা নির্দেশ ইস্যু করেছেন দিল্লির পানি সরবরাহ বিষয়ক মন্ত্রী অতীশের কাছে। তার কাছে একটি নোটের মাধ্যমে এই নির্দেশ দেন কেজরিওয়াল।
অর্থপাচারের একটি মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে ইডি। তারপর থেকে কেন্দ্রীয় এই এজেন্সির হেফাজতে আছেন এক সপ্তাহ ধরে। আম আদমি পার্টির নেতা কেজরিওয়াল তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি পাল্টা অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। বলেছেন, সরকার তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসাধনের জন্য এজেন্সিকে ব্যবহার করছে।
এরই মধ্যে আম আদমি পার্টি পরিষ্কার করেছে যে, অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা সত্ত্বেও তিনি অব্যাহতভাবে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন। এই দায়িত্ব পালনে কোনো আইনে তার বাধা নেই। কিন্তু জেলখানার আইন বিষয়টিকে খুব জটিল করে তুলতে পারে।
দিল্লির তিহার জেলের সাবেক একজন আইনি কর্মকর্তা সুনীল গুপ্ত বলেছেন, একজন কয়েদি সপ্তাহে মাত্র দু’বার সাক্ষাৎ করতে পারেন। সুতরাং কারাগারে থেকে সরকারি দায়িত্ব পালন সোজা কাজ নয়। জেলখানার বিধান এটাই বলে যে, আপনি শুধু আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সহযোগীদের সঙ্গে সপ্তাহে মাত্র দু’বার সাক্ষাৎ করতে পারবেন। ফলে এসব বিধিনিধান মেনে তার পক্ষে শাসনকাজ চালানো সহজ হবে না। অবশ্য এক্ষেত্রে একটি উপায় আছে। কর্তৃপক্ষ যদি কেজরিওয়ালকে গৃহবন্দি করে তাহলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। এটা করতে লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয় কুমার সাক্সেনার অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ যেকোনো ভবনকে জেল হিসেবে ঘোষণা দিতে পারে। এক্ষেত্রে তিনি অতীতের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, অতীতেও তো আদালত চত্বরকে অস্থায়ী জেল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। এমনটা করা হলে কেজরিওয়াল তার সরকারি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
কিন্তু লেফটেন্যান্ট গভর্নমেন্টের অফিস থেকে তার জন্য এমন নিদের্শ দেওয়া হবে বলে মনে হয় না। কারণ এ পদে কেন্দ্রীয় সরকারের মনোনয়ন এবং আম আদমি পার্টির সরকারের মধ্যে অচলাবস্থার ইতিহাস আছে। এখনও কেজরিওয়াল পদত্যাগ না করার কুফল খতিয়ে দেখছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু তিনি সরকারি কর্মকর্তা তাই তাকে তার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত বা প্রত্যাহার করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। যেসব সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এসব প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়।
সূত্র বলেছে, এমন ব্যক্তিদেরকে অবিলম্বে পদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। মদ বিষয়ক নীতির অধীনে আম আদমি পার্টির শীর্ষ নেতা মণীশ সিসোদিয়া, সঞ্জয় সিং এবং ভারত রাষ্ট্র সমিতির নেতা কে কবিতার পর উচ্চ পদস্থ চতুর্থ কর্মকর্তা হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে কেজরিওয়ালকে।
ভারত