আশরাফুল অন্তর: সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘পৃথিবীর অন্যান্য দেশে কোন জিনিসের দাম বাড়লে সেই জিনিস লোকে কম কিনে বা বর্জন করে। আর আমাদের দেশে দাম বাড়লে সেই জিনিস কিনে কিনে বাসায় জমাই। তখন আমরাই বাড়িতে ছোটখাটো মজুদদার হয়ে যাই।’
গতকাল বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেপুরে শেখ রাসেল পৌর মিলনায়তনে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ এবং যুব মহিলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. দীপু মনি আরো বলেন, ‘কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তারা তরমুজের দাম বাড়িয়ে দেয়। আমরা যদি ঠিক করি যে, আমরা সাত দিন কিংবা ১০ দিন সারাদেশে একটা মানুষও তরমুজ খাবো না। ওই তরমুজ ব্যবসায়ীর সব তরমুজ পঁচে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা কী করি? দাম বাড়লে আরো বেশি কিনি। যত বেশি কিনি সেই অসাধু ব্যবসায়ীরা আরো বেশি দাম বাড়ায় ‘
সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার মানেই হচ্ছে মানুষের সরকার, জনমানুষের সরকার, জনবান্ধব সরকার। এটি ঠিক যে আজকে আমরা দেখছি, রোজার মধ্যে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী যারা নিত্যপণ্যের জিনিসের দাম বাড়িয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়ার চেষ্টা করছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে সরকার দাম বেঁধে দিচ্ছে। এই সময়ে মানুষ যাতে একটু স্বস্তিতে থাকে সেজন্য সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিযে যাচ্ছে। কিছু কিছু ব্যবসায়ী তারপরও ঝামেলা করছে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মীরা সবসময় মানুষের পাশে থাকেন। কেননা, বঙ্গবন্ধু মানুষের আদর্শের রাজনীতি করতেন। তিনি দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কীভাবে এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি মিলবে। কীভাবে এদেশের মানুষ ভালো থাকবে-সুখে থাকবে সেই চেষ্টা করতেন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন, দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই কাজটি করছেন, দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন।’
দীপু মনি বলেন, এই বাংলাদেশে যেভাবে দারিদ্র ছিল, যেভাবে হতদরিদ্র ছিল। এখন দেখুন দারিদ্রের হার অর্ধেকের অনেক বেশি নেমে গিয়েছে। বর্তমানে দারিদ্রের হার ৪১ ভাগ থেকে ১৮ ভাগে নেমে এসেছে। হতদরিদ্রের সংখ্যা ২১ ভাগ থেকে এখন ৫ দশমিক ৬ ভাগে নেমে এসেছে। আর সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনা একজন মায়ের মন দিয়ে তিনি দেশটা চালান। একজন মা যেমন শত প্রতিকূলতা স্বত্ত্বেও তার সন্তানের ভালোর জন্য তার পথ থেকে কেউ বিচ্যুত করতে পারে না, ঠিক তেমনি শেখ হাসিনা তার দেশের মানুষের জন্য কল্যাণের জন্য শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এগিয়ে চলেছেন দৃঢ় পায়ে।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। গুলি, বোম, গ্রেনেড মারা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং বাংলার মানুষের দোয়াতে তিনি বেঁচে গিয়েছেন। তাঁর বেঁচে থাকাটা যে আমাদের জন্য কত নেয়ামত সেটি আমরা যদি চিন্তা করি যে, ১৫ বছর আগে আমরা কোথায় ছিলাম আর এখন কোথায় আছি।’
বাগমারা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কোহিনুর বানুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ।
এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক পিএম সফিকুল ইসলাম, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু,এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক প্রভাষক মাহবুবুর রহমান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আক্তার মিতা,জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপাশা খাতুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুল অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।