today visitors: 5073432

জিএসপি বাড়তি সুবিধা পেতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

 

 

১৯ মার্চ ২০২৪, ০১:০৬ এএম | অনলাইন সংস্করণ

প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলডিসি উত্তরণ পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা সুসংহত রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে বাংলাদেশের জন্য জিএসপি সুবিধা উত্তরণের মেয়াদ ২০২৯ সালের পরিবর্তে ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছেন।

 

আয়ারল্যান্ডের এন্টারপ্রাইজ, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী সাইমন কভেনির নেতৃত্বে একটি উচ্চ-পর্যায়ের আইরিশ প্রতিনিধিদল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ সমর্থন কামনা করেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

 

Advertisement

 

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য ইউএনডিপিকে যে আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী

 

নজরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী এজন্য আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছেন যাতে ইইউ বাংলাদেশের জন্য ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা, বিশেষ করে জেনারেলাইজড স্কিম অফ প্রেফারেন্স (জিএসপি) বৃদ্ধি করে।’

 

আয়ারল্যান্ডকে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও অংশীদার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ইইউ সদস্য দেশটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে।

 

তিনি ইইউ প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের স্বার্থের বিষয়ে বাংলাদেশকে সমর্থন করতে আয়ারল্যান্ডের প্রতি অনুরোধ জানান।

 

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার জন্য আইরিশ ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।

 

তিন থেকে চার বিলিয়ন ভোক্তার বাংলাদেশকে একটি সম্ভাব্য বড় মার্কেটিং হাব উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের আইসিটি, ফার্মাসিউটিক্যালস ও কৃষিভিত্তিক শিল্পের মতো বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতিশীল খাতে আয়ারল্যান্ডের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ রয়েছে।

 

শ্রম ইস্যু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের শ্রম ইস্যু নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়। শেখ হাসিনা আরও বলেন, ইইউভুক্ত দেশগুলো এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে কোনো ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ থাকবে না।

 

এ সময় আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বলেন, আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন।

 

ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে আয়ারল্যান্ডের প্রথম অনারারি কনস্যুলেট খোলার জন্য তিনি এখানে এসেছেন উল্লেখ করে আইরিস মন্ত্রী বলেন, এই কার্যালয়টি দুদেশের জনগণের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে সহায়ক হবে।

 

সাইমন কভেনি বলেন, আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের প্রযুক্তি ও খাদ্য শিল্পে (কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প) প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে চায়।

 

তিনি বলেন, আয়ারল্যান্ড জাতিসংঘ ও ইইউ ফোরামে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

 

বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে প্রচুর বাংলাদেশী শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে উল্লেখ করে সফররত মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, তারা বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানাবে।

 

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আয়ারল্যান্ড তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

 

তবে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে নিরাপত্তা জোরদার, তাদের উপার্জনশীল কর্মকান্ডে নিয়োজিত করার ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী ও আরও উন্নত ঘরের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

 

জবাবে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে হত্যা ও অন্যান্য অপরাধ কখনো কখনো দেখা যায়, কারণ সেখানে অনেক অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী রয়েছে- যারা এখানে দীর্ঘদিন অবস্থানের কারণে ইতোমধ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে।

 

শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিশ্বে শরণার্থীদের জন্য স্থায়ী ঘর নির্মাণের নজির নেই, তবে ভাষানচরে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য বাংলাদেশ মানসম্মত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।

তিনি বলেন, তারা সেখানে যেতে চাইলে আমরা ভাষানচরে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারি।

 

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ভারতে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কেভিন কেলি ও বাংলাদেশে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল মাসুদ জামিল খান উপস্থিত ছিলেন।