নূর-ই-রাব্বী
বিশেষ প্রতিনিধি :
সংবাদ প্রকাশের জন্য তথ্য দেয়ার কথা বলে ডেকে সাংবাদিককে হত্যা করার চেষ্টা করেছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে।
রংপুর মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ থানাধীন সাতমাথা বাজারে, প্রকাশ্যে সাংবাদিককে মারপিট করাসহ শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন, রংপুর মহানগরীর ৩০নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবহারকারী শহিদ।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) মহানগরীর সাতমাথা বাজারের পুর্ব দিকে মেসার্স তালুকদার ফিলিং স্টেশন (বন্ধ পাম্প) সংলগ্ন খালেকের চায়ের দোকানে, রাত সোয়া দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে আহত সাংবাদিক হারুন-অর-রশিদ বাবু রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ৬নং ওয়ার্ডের ৭নং বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতক্ষদর্শী এক ব্যবসায়ী বলেন, শহিদ, সাংবাদিক বাবু এবং তার সাথে আরও এক সাংবাদিক মিলে কথা বলছিল কিসের এক রিপোর্ট নিয়ে। তখন দোকানী আব্দুল খালেক এর ছেলেসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। পরে মাহিগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু, সাতমাথা বাজারের ব্যবসায়ী শামীম আশরাফ, আসার কিছুক্ষণ পরেই শহিদ সাংবাদিক বাবুর উপর অতর্কিত হামলা করেন। এবং প্রকাশ্যেই তাকে জবাই করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এ সময় শহিদ মদ্যপ্য অবস্থায় ছিলেন। এছাড়াও সে দৈনিক সন্ধ্যার পরেই চোলাই মদ পান করেন। এটা সাতমাথাবাসি সবাই জানে।
এবিষয়ে নির্যাতিত সাংবাদিক হারুন-অর-রশিদ বাবু বলেন, একটা মিটিংয়ে থাকা অবস্থায় কথা হয় শেখ শহীদের সাথে। তিনি জরুরী একটি সংবাদ করতে হবে মর্মে রংপুর মহানগরীর সাতমাথায় ডাকেন। তার ডাকে সাতমাথায় এসে বন্ধ পাম্প সংলগ্ন খালেকের চায়ের দোকানে বসে কথাবার্তার একপর্যায়ে, ৩০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু ও ব্যবসায়ী শামীম আশরাফ ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। রাত ৯:৫৮ মিনিটে আনোয়ার হোসেন আনু, মাহিগঞ্জের আফান উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের আহবায়ক কমিটির একটি কাগজ হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান,তার পর পরেই শহিদ সন্ত্রাসী কায়দায় বুকে, মুখে ও মাথায় এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারাসহ বুকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা তাকে বাঁচাতে আসলে তাদেরকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পূর্বপরিকল্পিত ভাবেই আক্রমণ চালিয়ে আহত করেন। এবং শাসিয়ে বলেন, এরপরে (রংপুর সদর উপজেলাধীন মাহিগঞ্জ) 'আফান উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন বিষয় নিয়ে রিপোর্ট করলে, জবাই করে মাটিতে পূতে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। এবং বলে সে এই ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। সাথে এটাও বলে যে তার বংশীয় মর্যাদা আরও কঠিন। তখন আনোয়ার হোসেন আনু মাহিগঞ্জের মানুষকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন।
সাংবাদিক বাবুর উপর পরিকল্পিত হামলার বিষয় জানতে চাইলে, মাহিগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, ২৯ফেব্রুয়ারী ২৪ইং শেখ শহিদ সাংবাদিক হারুন-অর-রশিদ বাবুকে রিপোর্ট করার কথা বলে সাতমাথায় ডেকে এনে, তার উপর হামলা করাটা ঠিক হয়নি। তিনি আরও বলেন বাবু আমার ছোট ভাই, ঘটনার পরে আমি তাকে ঔষধ কিনে দিয়েছি। আসলে ঘটনা আফান উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়কে নিয়ে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মাহিগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার, এসআই ইজার আলী বলেন, ওসি স্যার ছুটিতে আছে, সাংবাদিক হারুন-অর-রশিদ বাবু'র উপর হামলার কথা সকালে শুনেছি। তিনি আরও বলেন গতকাল দুপুরে ওই সাংবাদিকসহ জেলা প্রশাসক মহোদয় এর প্রোগ্রামে ছিলেন। তবে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আমরা আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাধারন জনগণ বলেন এই যদি হয় সাংবাদিকদের অবস্থা,তাহলে সাধারন জনগণের কি হবে?যেখানে সাংবাদিকদের বলা হয় সমাজের দর্পন,জাতীর বিবেক,আজ তাদের নিরাপত্তা কোথায়?এই হামলার তীব্রতর নিন্দা জানিয়ে বলেন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে প্রশাসনকে।
ভাবতে লজ্জা হলেও সত্যি এই যদি হয় সমাজ ও প্রশাসন ব্যবস্থা তাহলে এ দেশের জনগণ হয়ে বেঁচে থাকাই বৃথা।