সাবরিনা সুলতানা, জবি প্রতিবেদক:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেছেন. জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল তার অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- তিনি ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহিদ দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে ‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’ শীর্ষক স্লোগানে এ অনুষ্ঠান ক্যাম্পাসের ‘একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি’ ভাষ্কর্য প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর ধারাবাহিকতায় সোনার বাংলা গড়তে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাও একই পথে চলছেন; কিন্তু সে পথটাও অনেক কণ্টকাকীর্ণ। কেননা আমরা এখনও বিভিন্ন ষড়যন্ত্র দেখতে পাই। তাঁর জীবনের ওপর একুশ বারের মতো হামলা করা হয়। অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রতি মর্যাদা দেওয়ার অনন্য দৃষ্টান্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি থেকেই আমাদের স্বাধিকার ও অধিকার আন্দোলন শুরু হয়। পরবর্তীতে ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু মুক্তির সংগ্রাম বলতে আমাদের সবার অর্থনৈতিক মুক্তি ও সমনাগরিক অধিকার বুঝিয়েছেন। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অর্থ হচ্ছে এদেশে এমন একটি সমাজ হবে- যেখানে প্রত্যেকের যে যার অবস্থানে সমান অধিকার ভোগ করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে যারা পিছিয়ে আছে তাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর মতে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাতে হবে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে মূল্যবোধের অবক্ষয় চরম পর্যায়ে, মানুষের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেকক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া মানুষকেও আমরা পিছিয়ে দিচ্ছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মননে ধারণ করে মূল্যবোধসম্পন্ন দক্ষ নাগরিক হতে হবে; আর তাহলেই আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণ রাষ্ট্র তৈরি করতে পারবো।’
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ হুমায়ূন কবীর চৌধুরী, স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান, জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন।
আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিলো নৃত্য পরিবেশনা এবং সংগীত বিভাগের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সংগীতানুষ্ঠান। পরবর্তীতে সঙ্গীত বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। একই সাথে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।