পাবনার সদর উপজেলার কলেজছাত্র মিজানুর রহমান হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে হত্যার সঙ্গে জড়িত ৫ আসামিকে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি মিজানুর রহমানকে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়। আর পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১ ফেব্রুয়ারি মারা যান তিনি।
নিহত মিজানুর সদর উপজেলার সাহাপুর যশোদল গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি আটঘরিয়া সরকারি (অনার্স) কলেজে এইচএসসি মানবিক বিভাগে লেখাপড়া করতেন।
গ্রেফতাররা হলো: পাবনা পৌর এলাকার চক ছাতিয়ানী মহল্লার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রাফিউল ইসলাম রাফি (২৩), একই মহল্লার আব্দুল গাফফারের ছেলে নাঈম ইসলাম (২৪), শালগাড়িয়া নিকারীপাড়া মহল্লার বনি ইসরাইলের ছেলে ইয়াছিন আলী রাহাত (২৩), মধ্য শালগাড়িয়া মহল্লার মৃত ইলিয়াস আলীর ছেলে ইসতিয়াক মাহমুদ মিশন (২৪) ও রাধানগর নারায়ণপুর মহল্লার শফিকুল ইসলাম শফিকের ছেলে শরিফুল ইসলাম শরিফ (৩৯)।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান, পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম।
তিনি জানান, গত ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অভিযুক্ত রাফিউল ইসলাম রাফি তার মোবাইল ফোন দিয়ে কলেজছাত্র মিজানুর রহমানের ফোনে কল করে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের বাংলা বিভাগের পিছনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন অভিযুক্ত ইয়াছিন আলী রাহাত, নাঈম ইসলাম, শরিফুল ইসলাম শরিফ, ইসতিয়াক মাহমুদ মিশনসহ আরও কয়েকজন।
মিজানুর রহমান আসামাত্রই অভিযুক্তরা তাকে মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে মিজানুরের মোবাইল ফোন থেকে তার বাবার কাছে অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম কল করে ২০ হাজার টাকা দাবি করে এবং বলে টাকা না দিলে তার ছেলের সমস্যা হবে। তখন কোনও কিছু ভেবে না পেয়ে মিজানুর রহমানের বাবা অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনে কথা বলে ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন।
কিন্তু নিজেদের চাহিদামাফিক টাকা না পাওয়ায় মিজানুর রহমানকে আবারও মারধর করতে থাকে। মারধরের এক পর্যায়ে মিজানুর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে অভিযুক্ত আসামি রাফিউল ইসলাম রাফি, ইয়াছিন আলী রাহাত, নাঈম ইসলাম, অনিক আহম্মেদ রিয়াদ মিলে তাকে আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালে রেখে পালিয়ে ঢাকা চলে যান। বাকিরা পাবনায় আত্মগোপন করে থাকেন। পরবর্তীতে মিজানুর রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১ ফেব্রুয়ারি মারা যান। এ ঘটনায় পাবনা সদর থানায় মামলা করেন নিহত মিজানুর রহমানের বাবা শহিদুল ইসলাম।
মাসুদ আলম আরও জানান, মামলার পর অভিযানে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি এমরান মাহমুদ তুহিনের নেতৃত্বে একটি দল। তারা তথ্য প্রযুক্তি ও সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার সাভার থানার আমিনবাজার এলাকা থেকে প্রথমে রাফিউল ইসলাম রাফি, ইয়াছিন আলী রাহাত ও নাঈম ইসলামকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে, পাবনা সদর থানার রাধানগর ডিগ্রি বটতলা এলাকা থেকে শরিফুল ইসলাম শরিফ ও ইসতিয়াক মাহমুদ মিশনকে গ্রেফতার করা হয়।