today visitors: 5073432

বাগমারায় সোহাগ খুনের ঘটনায় মুলহোতা সর্বহারা ক্যাডার আশাদুল ধরাছোঁয়ার বাইরে 

 

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী:

 

রাজশাহীর বগমারায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় সোহাগ (২৬) নামে এক যুবককে নির্মম ভাবে খুন করা হয়। নিহত সোহাগ যশোরের মনিরামপুর এলাকার শরিফুল ইসলাম মিস্ত্রীর ছেলে। গত (২ ফেব্রুয়ারী) শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীরা সোহাগকে খুন করে।

ওই ঘটনায় সোহাগের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম সাগর বাদী (গত ৩ ফেব্রুয়ারী) বাগমারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। হত্যা কান্ডের সাথে জড়িতরা এলাকা থেকে পালিয়ে রয়েছে। এরই মধ্যে হত্যা মামলায় শিবলু ও ওহিদুর নামের দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এই হত্যাকান্ডের মুলহোতা সর্বহারা ক্যাডার আশাদুলকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি বাগমারা থানা পুলিশ।

এ বিষয়ে বাগমারার ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রাম এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্বহারা নেতা আসাদুল পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি এম এল লাল পতাকার সক্রিয় নেতা ছিল। ২০১৯ ঐ এলাকার অনেক চরমপন্থি সদস্য আত্মসমর্পণ করলেও আসাদুল আত্মসমর্পণ করেনি।

তবে এলাকাবাসীরা আরও জানা যায়, আ:হামিদ মরু চেয়ারম্যান হত‍্যা মামলার অন‍্যতম আসামী ছিলেন সর্বহারা নেতা আসাদুল। উক্ত মামলায় তার যাবৎজ্জীবন সাজা হয়। বর্তমানে সে ঐ মামলায় জামিনে আছে। এছাড়াও ডোখল পাড়া গ্রামের ওমর হত‍্যা মামলার সে অন‍্যতম আসামী।

এদিকে সর্বহারা নেতা আসাদুলের বিরুদ্ধে রয়েছে এলাকাবাসীর নানা অভিযোগ, মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়াগ্রামের নজরুল ইসলামের বাড়িতে আগ্নি সংযোগ, নুরুল ইসলামের গরুর গোয়ালে আগুন দিয়ে গরু পুড়িয়ে মারাসহ একাধিক মামলার আসামী এই সর্বহারা নেতা আসাদুল ।

তবে সোহাগ খুনের মূলহোতা সর্বহারা নেতা আসাদুলকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করা জরুরি বলে এলাকাবাসীরা মনে করছেন।

 

উল্লেখ্য, ২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে মনাহার ইসলাম তাদের জমিতে থাকা সরিষা তুলতে বিলে যায়। এ সময় একই গ্রামের বেশ কয়েকজন সংঘবদ্ধ ভাবে হাজির হয় মনাহার ইসলামের সরিষার ওই জমিতে। সেখানে তারা মনাহারকে বলতে থাকে তুকে বিলের জমিতে আসতে নিষেধ করেছি তারপরও কেন সরিষা তুলতে এসেছিস। এ সময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা বাধে। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মনাহারকে সরিষার জমিতেই সন্ত্রাসী কায়দায় বেধড়ক মারপিট করে। সন্ত্রাসী হামলায় আহত মনাহারকে উদ্ধার করে পাশের আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বন্ধুর উপরে সন্ত্রাসী হামলার খবর পেয়ে ঢাকা থেকে আহত মনাহার ইসলামের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয় সোহাগসহ তার বন্ধুরা।

 

আহত মনাহারের বাসায় পৌঁছার আগেই সন্ত্রাসী হামলায় শিকার হয় সোহাগ সহ তার বন্ধুরা। ওই সকল সন্ত্রাসীর হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সোহাগ। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল থেকে নিহত সোহাগের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে লাশের ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে এ ঘটনায় তৎক্ষণাত কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও অভিযান অব্যাহত রাখে পুলিশ।

জানা গেছে, ঢাকার মালিবাগে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতে গিয়ে বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আনিসার রহমানের ছেলে মনাহার ইসলামের সাথে পরিচয় হয় সোহাগের। সমবয়সী হওয়ায় সেই পরিচয় ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে রুপ নেয়। এসময় দুই জনেই ওই কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দেয়। চাকরি ছাড়লেও বন্ধ হয়নি তাদের যোগাযোগ। প্রায়ই দুজনের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হতো। সেই যোগাযোগ থেকে আহত বন্ধুকে দেখতে আসছিল সোহাগ সহ তার বন্ধুরা।