নিজস্ব প্রতিনিধি :
গত কয়েকদিন বইমেলায় গিয়ে কিছু তরুণের রোষানলে পড়েছেন আলোচিত দম্পতি খন্দকার মুশতাক আহমেদ ও সিনথিয়া ইসলাম তিশা। এরপরও বইমেলায় যাওয়া বন্ধ রাখবেন না বলে জানিয়েছেন তারা। তাই নিরাপত্তা চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের শরণাপন্ন হন এই দম্পতি।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করেন মুশতাক ও তিশা।
মুশতাক বলেন, ‘আমার দুটি বই মেলায় প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম দিকে পাঠকের উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। দূর-দূরান্ত থেকে শতশত লোক এসেছে, আমাদের সঙ্গে ছবিও তুলেছে। কিন্তু ৯ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ কিছু সংখ্যক ছেলে আজেবাজে কথা বলা শুরু করলো। আমার স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। মেলায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ায় আমরা স্বেচ্ছায় সেখান তেখে চলে যাই। যখন গাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম ওইসব ছেলেরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। আমরা আবার মেলায় গেলে আমাদের গুলি করে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়। আমার কিছু বই ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি আমি শাহবাগ থানায় জিডি করেছি। কিছু ভিডিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়েছি। বাংলা একাডিমিকেও বিষয়টি জানিয়েছি। আজও আমাদের হয়রানি করা হয়।’
‘যারা এমনটা করেছে তারা কেউ মেলোয় বই কিনতে আসেনি। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের হেয়প্রতিপন্ন করতেই তারা তাদে মেলায় প্রবেশ। মেলা থেকে আমাদের কেউ বের করেনি। পরিবেশ নষ্ট হবে, এই ভেবে আমরা স্বেচ্ছায় বেরিয়ে যাই, যোগ করেন তিনি।
ডিবি প্রধানের কাছে আসার বিষয়ে মুশতাক বলেন, ‘ডিবি প্রধান হারুন সাহেবে খুবই ভালো মানুষ। মিডিয়ায় দেখিছি তার কাছে যেই এসেছে সাহায্য পেয়েছেন। তাই আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। দুজনকে হয়রানির বিষয়ে লিখিত অভিযোগও দিয়েছি। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিশা আমার বিবাহিত স্ত্রী। মুসিলম আইন মেনেই বিয়ে করেছি। সে সাবালিকা, তার নিজের সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার রয়েছে। আমি বলছি ভালো আছি, সেও বলছে ভালো আছে। প্রায় সে বলে, আমার ভালোবাসা ও অস্থার মানুষ খন্দকার মুশতাক। এখানে আমাদের হয়রানির মানে কী থাকতে পারে আমি জানি না।’
বিয়ে নিয়ে মিডিয়ায় ছড়ানোর বিষয়ে মুশতাক বলেন, ‘তিশার সঙ্গে বিয়ের বিষয়ে প্রাইভেট রাখতে চেয়েছি। আমি তো গোপন থাকতে চেয়েছি। কিন্তু এক মাস আগে রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার একটি ভিডিও ফেসবুকে দেয়ার পর ভাইরাল হতে থাকি। দুদিন পর পত্রিকায় ‘খন্দকার মুশতাক নাবালিকা নিয়ে সুখে আছেন’ এমন নিউজ হলো। এরপর আরেকটি পত্রিকায় পজিটিভ নিউজ তুলে ধরতে চায়। তখন গিয়ে আমরা মিডিয়ার মুখোমুখি হলাম। একের পর এক সবাই আসতে শুরু করে।’
‘গতবারও একুশে মেলায় আমার বই বেরিয়েছিল। তখন তো কোনো সাংবাদিক আসেনি। কিন্তু এবার অনেকে এসেছেন,’ যোগ করেন তিনি।
বইয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার লেখা বইয়ে ভলোবাসা প্রমোট করিনি। যাতে সবাই সত্য কথা জানে তাই লিখেছি। আমার বায়োগ্রাফিও বলা যেতে পারে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পরামর্শ রেখেছি। আসলে অনেক সময় মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। নিয়ন্ত্রহীন ভালোবাসা যদি সমাজের জন্য অবক্ষয়ের সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে বলেছি। যার যার জীবন তার তার। কেউ ঠিক করতে পারে না কাকে বিয়ে করবো। এটা বলার অধিকার কারও নেই। শুধু আমার একান্ত ব্যাপার।’
তার বইয়ে অশ্লীল কিছু দেখাতে পারলে নিজেই ছিঁড়ে ফেলবেন বলে জানিয়েছেন মুশতাক। বলেন, ‘আমি মেলায় যাবো।’