রহিদুল ইসলাম, রাজশাহীঃ
রাজশাহী রেলস্টেশনে ঘোরাঘুরি ও ধুমপান করা তরুণদের ধরতে গিয়ে মারপিটের শিকার আনসার সদস্য মাইনুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে নিহত মাইনুল ইসলামের স্ত্রী আলম আরা বেগম বাদী হয়ে জিআরপি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আনসার সদস্যকে মারপিটের ঘটনার সাথে জড়িতদের স্বনাক্ত করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তানভির (১৭) ছাত্র মাইনুলকে মারপিট করেন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়ছে।
নিহত মাইনুল ইসলাম (৪৫) রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাঙ্গনপুর পালপুর গ্রামের বাসিন্দা। অভিযুক্ত ওই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। তার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়।
রাতে ঘটনাস্থলে দায়িত্বে ছিলেন আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে রেলওয়ে থানার একজন উপপরিদর্শকের (এসআই) সঙ্গে তাঁরা কয়েকজন দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় স্টেশনের ৪ ও ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে তনিজন তরুণ অস্বাভাবিকভাবে ঘোরাফেরা ও ধুমপান করছিলেন। তাদের চলে যেতে বলা হলে পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে গালাগালও শুরু করেন। তখন ওই এসআই তাদের ধরার জন্য আনসার সদস্যদের নির্দেশ দেন।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, ওই তরুণেরা ৩ ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়ে পালানোর সময় আনসার সদস্যরা তাদের ধরতে যান। এ সময় আনসার সদস্য মাইনুল ইসলামের বুকে ঘুষি মারেন একজন। এতে মাইনুল ইসলাম পড়ে যান। আর অন্য আনসার সদস্যরা ঘুষি মারার পরপরই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ওই ছাত্রকে ধরে ফেলেন।
ঘটনার পর মাইনুল ইসলামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর ইসিজি করা হয়। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে মাইনুলের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে আসেন।
মাইনুল ইসলামের ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন জানান, রাত ৯টার দিকে তাদের প্রতিবেশী এক আনসার সদস্য ফোন করে এ খবর জানান। তার ভাই বাড়ি থেকেই নিয়মিত এসে দায়িত্ব পালন করতেন। ডিউটি শেষে আবার বাড়ি ফিরে যেতেন।
রাজশাহী রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক আবু শাহাদাত জানান, আনসার সদস্য মাইনুল ইসলামকে ঘুষি মেরেছিল রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র তানভির (১৭)। তাকে রেলওয়ে থানায় আটক রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এর পর নিহতের স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটক ছাত্রকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।