শেখ শোভন আহমেদ:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ১৯ নম্বর চাচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান এবং দোতলায় প্রধান শিক্ষকের জন্য অফিস কক্ষ নির্মাণ কাজ চলছে একসঙ্গে। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যেকোনো সময় দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিডিপি-৪ প্রকল্পের অধীনে বিদ্যালয়টির দোতলায় প্রধান শিক্ষকের জন্য একটি অফিস কক্ষ নির্মাণের জন্য ১৫ দিন আগে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।২০২০ সালে নির্মিত ৫ কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবনের সিঁড়ি ঘরের উপরের ছাদ ভাঙা এবং ইট ও কংক্রিটের টুকরা বারান্দা ও মূল ফটকে পড়ে থাকায় শিক্ষার্থীদের যাওয়া আসাসহ পাঠদানের সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যে কোনো সময় যেকোনো শিক্ষার্থী দুর্ঘটনায় কবলিত হতে পারে।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, ভবনটির ৪টি কক্ষে শিশু, প্রথম, তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয় এবং একটি কক্ষ অফিস হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে। জানা যায়, ২৭৫ জনের ওপর শিক্ষার্থী থাকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের জন্য আলাদা অফিস কক্ষ নির্মাণের বরাদ্ধ আসে উপজেলার কালীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চাচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বরাদ্দের অর্থ পর্যাপ্ত না থাকায় বিদ্যালয় ভবনের দোতালায় অফিস কক্ষ নির্মাণ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চাচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ভাঙা ইট কংক্রিটের স্তুপ পড়ে আছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আরেকটি পকেট গেট দিয়ে যাওয়া আসা করছে। ভবন ভাঙার বিকট শব্দ ও ধুলাবালিতে চলাফেরা ও পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সামি ইসলাম জানায়, প্রচণ্ড শব্দের কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে আমাদের ঠিকমতো ক্লাসে বসে পড়তে অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের চলাচলও করতে হচ্ছে সাবধানে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিভা রানী জানান, অফিস কক্ষ নির্মাণের জন্য আমার বিদ্যালয়ের দু’টি ভবনের মাঝামাঝি একটি স্থানে করার ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু সেটি করা সম্ভব না হওয়ায় নতুন ভবনের দোতলায় করা হচ্ছে অফিস কক্ষটি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ যেভাবে করছে তাতে চলমান পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। আর আমরা শিক্ষক-কর্মচারীরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দেখাশোনা করে রাখছি। যাতে করে অনাকাঙ্খিত যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়িয়ে যেতে পারি। অফিস কক্ষ নির্মাণাধীন ভবনে চারটি শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম চলে। তাই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এবং পাঠদানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্মাণ সামগ্রী অপসারণ করে কাজ শেষ করা দাবি জানাচ্ছি।
কালিগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রকল্পে উল্লিখিত নকশার আলোকেই অফিস কক্ষ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। যেহেতু একই ভবনে পাঠদান ও নির্মাণ কাজ চলছে সেহেতু দ্রুত ইট, কংক্রিটের স্তুপ সরিয়ে ফেলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আমি এখনই জানিয়ে দিচ্ছি। এছাড়া সতর্কতার সঙ্গে নির্মাণকাজ শেষ করার ব্যাপারেও বলব।