কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি প্রথম বুলেটিন
কুড়িগ্রাম জেলায় সংগঠিত সকল অপরাধীকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ রাত অনুমানিক ২.৩০ ঘটিকায় নাগেশ্বরী পৌরসভাধীন কবিরের ভিটা নামক গ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী শ্রী সত্য চন্দ্র শীল (৫০) তার স্ত্রী লতা রানী (৪০) কে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নৃশংসভাবে গলায় কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ঘাতক স্বামী পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনার সংবাদ পেয়ে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে প্রকাশ্য ও গোপন অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখে। অভিযানের একপর্যায়ে নাগেশরী থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব রুপ কুমার সরকার, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত জনাব সরোয়ার পারভেজ ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিরস্ত্র) প্রভাত রঞ্জন রায় সহ একটি চৌকস টিম গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে আসামী সীমন্তবর্তী এলাকা লোহাকুচি বর্ডার হয়ে পালানোর চেষ্টা করছে। এমতাবস্থায় ঘটনার ১২ ঘন্টার মধ্যে পলাতক ঘাতক স্বামী সত্য চন্দ্র শীলকে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানাধীন পলাশী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বড়াইবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে হতে ২১ জানুয়ারি ২০২৪ বিকালে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
হত্যাকান্ডে আসামী কর্তৃক ব্যবহৃত কাঠের হাতলযুক্ত রক্তমাখা ধাঁরালো কুড়াল ও আসামীর পরিহিত সাদার রংয়ের রক্তমাখা সুইটার ঘটনাস্থল হইতে উদ্ধার করা হয়েছে।
নাগেশ্বরী পৌরসভাধীন জিকো সিনেমা হলের উত্তর পাশে কামারপাড়া নামক স্থানে আসামীর সেলুনের দোকান রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এই হত্যাকান্ডের ৩টি ক্লু-নিয়ে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার কাজ করছে। তার মধ্যে একটি হলো পূর্বের অর্থ ঋণ, দুই হতাশা বা ডিপ্রেশন এবং তৃতীয়টি হলো ড্রাগ বা বিভিন্ন পিলের প্রভাবে গত ২০ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ আসামী শ্রী সত্য চন্দ্র শীল সেলুনের কাজ করে রাত অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার সময় বাড়ীতে এসে স্ত্রীর সাথে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। আসামী সত্য চন্দ্র শীলের দুই ছেলে শ্রী সোহাগ চন্দ্র শীল (২৫) ও শ্রী সাগর চন্দ্র শীল (১৭) রাতের খাবার খেয়ে রাত অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় নিজ নিজ শয়ন ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘটনার রাত ২১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ০২.৩০ ঘটিকার সময় আসামী সত্য চন্দ্র শীল এর ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে ঘুম থেকে উঠে ঘরের মধ্যে টেবিলের উপর রাখা কাঠের হাতল যুক্ত ধাঁরালো কুড়াল হাতে নিয়ে খাটের উপর ঘুমিয়ে থাকা তার স্ত্রী লতা রানী শীল এর গলায় পরপর দুটি কোপ মারলে ভিকটিম লতা রানী শীল ঘটনাস্থলে মৃত্যু বরণ করেন। পার্শ্বের কক্ষে শুয়ে থাকা ছোট ছেলে সাগর শীল (১৭) তার মা-বাবার শয়ন ঘরে শব্দ শুনতে পেয়ে ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পায় যে, তার মা ভিকটিম লতা রানী খাটের উপর রক্তাক্ত ভাবে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ছোট ছেলে সাগর শীল তার বড় ভাইকে চিৎকার করে ডাক দিলে বড় ভাই সোহাগ শীল (২৫) বাবা-মার শয়ন ঘরে এসে তার মাকে খাটের উপর রক্তাক্ত ভাবে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পায়। তাদের দুই ছেলে আশপাশের লোকজনকে ডাকতে গেলে আসামী শ্রী সত্য শীল ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে আত্মগোপন করে। উক্ত মামলা সংক্রান্তে গভীর ও আইনানুগ তদন্ত চলমান।
এই সংক্রান্তে নাগেশরী থানায় পেনাল কোড হত্যা মামলা রুজু করা হয়।