স্পোর্টস ডেস্ক :
সিলেট স্ট্রাইকার্সের বোলিং তোপে মাত্র ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে একপ্রকার ছিটকে পড়েছিল রংপুর রাইডার্স। তাতে স্বল্প পুঁজি নিয়েও জয়ের আশা জেগেছিল সিলেট শিবিরে। কিন্তু বাবর আজম ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই মিলে দাপুটে ব্যাটিংয়ে মাশরাফীদের নিরাশ করে রংপুরকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সিলেটের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে রংপুর। ১২১ রানের লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১০ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় তারা। ৭ বছর পর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ফিরে ফিফটি দিয়ে নিজের প্রত্যাবর্তনটা রাঙান বাবর। ওমরজাই অপরাজিত থাকেন ৪৭ রানে। সিলেটের হয়ে ২০ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন দুশান হেমন্ত।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে চলতি আসরের সপ্তম ম্যাচ। দিনের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে কোনো দলই দেড়শ রান সংগ্রহ করতে পারেনি। তবে সিলেট এদিন করেছে আসরের সর্বনিম্ন রান। যে রান নিয়ে প্রতিপক্ষকে রুখে দেয়া প্রায় অসম্ভব। কিন্তু সপ্তম ওভার শেষে রংপুরের স্কোরকার্ডের দিকে তাকালে যেকোনো ক্রিকেট বোদ্ধাই বলতো জয়ের পাল্লাটা সিলেটের দিকেই ভারী।
এ ওভারে আক্রমণে এসে চার বলের মধ্যে তিন ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান লঙ্কান স্পিনার দুশান হেমন্ত। শামীম হোসেন (২), মোহাম্মদ নবি (০) ও শেখ মেহেদী হাসান তিন জনই সাজঘরের পথ ধরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। তাতে ৭ ওভার শেষে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটের বিনিময়ে ৩৯ রান।
অবশ্য শুরু থেকে রংপুর শিবিরে চাপটা তৈরি করেছিলেন রিচার্ড এনগারাভা, তানজিম হাসান সাকিব ও নাজমুল ইসলাম। ৭ বলে ৬ রান করা ওপেনার রনি তালুকদারকে জাকির হাসানের ক্যাচে পরিণত করেন এনগারাভা। ৫ বল খেললেও রানের খাতা খোলার আগে নাজমুলের বলে বোল্ড হন ব্রান্ডন কিং। আর ৭ বলে ৮ রান করা রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সাকিবের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
২০১৭ সালের পর বিপিএল খেলতে এসে সতীর্থদের আসা-যাওয়া দেখে যাচ্ছিলেন ১৬ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকা পাকিস্তানের ব্যাটার বাবর আজম। কার সঙ্গ নিয়ে তিনি দলের হাল ধরবেন হয়তো এমন চিন্তাই আসছিল নিউজিল্যান্ড সিরিজ খেলে বাংলাদেশে পা রাখা বাবরের।
অবশেষে যোগ্য সঙ্গী হিসেবে পেলেন আফগান অলরাউন্ডার আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে। সপ্তম উইকেটে এ দুই ব্যাটার মিলে
৮৬ রানের জুটি গড়ে সিলেটের সব আশা নস্যাত করে দেন। ১৮.২ ওভারের মধ্যে দলকে এনে দেন ৪ উইকেটের জয়।
৮৬ রানের জুটি গড়ে সিলেটের সব আশা নস্যাত করে দেন। ১৮.২ ওভারের মধ্যে দলকে এনে দেন ৪ উইকেটের জয়।
৭ বছর পর বিপিএল খেলতে আসা বাবর নিজের প্রত্যাবর্তনটা রাঙান ফিফটি দিয়ে। ৪৯ বলে ৬ চারের মারে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৩৫ বলে ৩ ছক্কা ও ২ চারে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন ওমরজাই। তিনি নির্বাচিত হন ম্যাচসেরা।
এর আগে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১২০ রান সংগ্রহ করে সিলেট। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই রংপুরের বোলারদের তোপে পড়ে সিলেট। দলের খাতায় মাত্র ৩৯ রান যোগ হতেই সাজঘরে পাড়ি দেন ৫ ব্যাটার।
ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর ১৪ রান ছাড়া বাকি চার ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে প্রবেশ করতে পারেননি। মোহাম্মদ মিথুন ৫, মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ৬, ইয়াসির আলী ৯ আর জাকির হাসান মাত্র ১ রান করে আউট হন। ষষ্ঠ উইকেটে বেনি হাওয়েল ও বেন কাটিং মিলে দলের হাল ধরেন।
দুজনের ব্যাটে চড়ে কোনো রকম শতরান পার করে সিলেট। তাদের জুটিতে আসে ৬৮ রান। ৩১ বলে ৩১ রান করে ইনিংসের ১৮তম ওভারে রিপন মন্ডলের শিকার হন কাটিং। ৩৫ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৭ রান করে ইনিংসের শেষ ওভারে রিপনের শিকার হন হাওয়েলও।
বল হাতে রংপুরের হয়ে সবচেয়ে কিপটে বোলিং করেন মোহাম্মদ নবি। ৪.২৫ ইকোনমিতে মাত্র ১৭ রান খরচায় ১ উইকেট নেন তিনি। সিলেটকে শুরুতে চাপে ফেলা মেহেদী ১৮ রান খরচায় নেন ২ উইকেট। এছাড়া শেষদিকে ২ উইকেট নিজের পকেটে পুরেন রিপন।