today visitors: 5073432

২ দিন পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক চট্টগ্রামে

রোববার সকাল থেকে পর্যাপ্ত চাপের স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের গ্রাহকরা।

দুই দিন পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে চট্টগ্রামে। দীর্ঘ ভোগান্তির পর স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহ পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

রোববার সকাল থেকে পর্যাপ্ত চাপের স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের গ্রাহকরা। চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

নগরীর অক্সিজেন শীতল ঝর্ণা এলাকার বাসিন্দা চম্পা দে দিপন বলেন, ‘শনিবার বিকেল থেকে গ্যাস মিটিমিটি ছিল, তাতে রান্না করা যাচ্ছিল না। তবে রোববার সকাল থেকে স্বাভাবিক গ্যাস পাচ্ছি।’

নগরীর দিদার মার্কেট এলাকার বাসিন্দা সৌরভ দেবনাথ বলেন, ‘ শনিবার রাতেও আমাদের এখানে প্রেশার কম ছিল। তবে সকাল থেকে স্বাভাবিক আছে। এই দুইদিনে কী পরিমাণ কষ্ট পেয়েছি, তা বলার বাইরে।’

পতেঙ্গা এলাকার আবু কাউসার বলেন, ‘এদিকের অনেকে শনিবার থেকে স্বাভাবিক পেয়েছে। তবে আমাদের চুলা জ্বলছিল মিটিমিটি। রোববার সকাল থেকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক আছে।’

গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় জনজীবনও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। কমেছে এলএনজি ফিলিং স্টেশন ও খাবার দোকানের সামনের লম্বা সারি। সড়কে যানবাহন চলাচলও বাড়ছে ধীরে ধীরে।

সরবারহ স্বাভাবিকের বিষয়ে ভাসমান টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রুপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস লিমিটেড কোম্পানির (আরপিজিসিএল) মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) প্রকৌ. মো. শাহ আলম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত থেকে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। ওইদিকের সব লাইন খালি হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক চাপ পেতে একটু সময় লেগেছে। টার্মিনালে এখনও কিছু কাজ আছে, সেসব শেষ হলে চাহিদার পুরোটাই সরবারহ করা হবে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আকষ্মিক গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রামে। এতে রাতে বিষয়টি অনেকেই টের না পেলেও সকাল থেকে দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী৷

বাসাবাড়িতে রান্না না হওয়ার খাবার হোটেলও রোস্তারার সামনে দেখা যায় মানুষের দীর্ঘ সারি। ফিলিং স্টেশনে গ্যাস না থাকায় বন্ধ হয়ে যায় চালিত যানবাহন। এতে সড়কে নানা কাজে বের হওয়া যাত্রীরাও দুর্ভোগে পড়েন৷

চট্টগ্রামসহ সারাদেশে চাহিদার সিংহভাগ গ্যাসের যোগান হয় আমদানির মাধ্যমে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে আমদানি করা এসব গ্যাস কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান দুটি টার্মিনাল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) হিসেবে সরবরাহ করা হয়। তাদের একটির নির্মাতা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান এক্সিলারেট এনার্জি, অন্যটি নির্মাণ করেছে সামিট গ্রুপ।

কেজিডিসিএল বলছে, দুই টার্মিনালের মধ্যে এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনালটি ১ নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। ওই টার্মিনালটি বিচ্ছিন্ন করে সেসময় সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছিল সংস্কারের জন্য। আরও আগে টার্মিনালটি দেশে আসার কথা থাকলেও সেটি আসে কয়েকদিন আগে।

বুধবার এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনালটি গ্যাস সরবরাহের জন্য যুক্ত করার পর সামিটের টার্মিনালটি খুলে নেয়া হয়। সংস্কারের জন্য সেটিরও সিঙ্গাপুর পাঠানোর কথা রয়েছে। এরমধ্যে সরবরাহ চালুর পর এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনালে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। আর এতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে এই টার্মিনাল থেকেও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। পরে যান্ত্রিক ত্রুটি সারানোর পর শুক্রবার রাত ১০টা থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয় চট্টগ্রামে।

তবে সরবরাহ শুরু হলেও শনিবার বিকেল পর্যন্ত পর্যাপ্ত চাপের স্বাভাবিক গ্যাস সরবারহ পাননি গ্রাহকরা।