ভারতের ওপর কেন এত ‘ক্ষুব্ধ’ মালদ্বীপ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

ভারতীয় সেনাদের মালদ্বীপ থেকে প্রত্যাহার করতে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর আল্টিমেটামের পর আলোচনায় ইস্যুটি। কেন মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরাতে চান মুইজ্জু, এ নিয়ে সম্প্রতি বিশ্লেষণধর্মী এক প্রতিবেদন করেছে এনডিটিভি।

সম্প্রতি চীন থেকে ফিরেই মালদ্বীপে থাকা ভারতীয় সেনাদের দেশে ফেরত নিতে নয়াদিল্লিকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। আগামী ১৫ মার্চের মধ্যেই মালে ছাড়তে হবে ভারতীয় সেনাদের।
 
বর্তমানে ভারতের কতজন সেনা মালদ্বীপে অবস্থান করছেন, কেন তারা সেখানে আছেন কিংবা এর পেছনে চীনের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, এনডিটিভির প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হয়েছে।
 
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত মহাসাগরের এ দ্বীপ দেশটিতে বর্তমানে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ৭৭ জন সদস্য রয়েছেন। সেনাদের পাশাপাশি ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর ১২ জন মেডিকেল কর্মকর্তাও মালদ্বীপে মোতায়েন রয়েছেন।
 
মালদ্বীপের প্রত্যন্ত দ্বীপের বাসিন্দাদের মানবিক এবং চিকিৎসা সহায়তা দেয়ার জন্য সেনারা দেশটিতে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে দিল্লি। গণমাধ্যমটির তথ্য বলছে, নয়াদিল্লির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল মালদ্বীপের মানুষ। অতিমাত্রায় নির্ভরতার কারণে মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দিল্লির হস্তক্ষেপ উদ্বেগ তৈরি করেছে। 
 
এমনকি ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে দেশের ‘সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। আর তাই ভারতের প্রভাব কমিয়ে আনার অংশ হিসেবে দেশটিতে থাকা ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত মালদ্বীপ সরকার নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
 
অন্যদিকে, দেশটি থেকে ভারতীয় সেনাদের সরাতে চীনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভূরাজনৈতিক কারণে মালদ্বীপে প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে চীন। মালদ্বীপের পাশেই রয়েছে ভারত মহাসাগরের প্রধান ব্যস্ততম সামুদ্রিক বাণিজ্যপথ। যে পথ দিয়ে চীনের তেল আমদানির প্রায় ৮০ শতাংশই পরিবহন করা হয়।
 
সম্প্রতি মুইজ্জুর চীন সফরে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। 
 
বিশ্ব ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মালদ্বীপকে ১.৩৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দিয়েছে চীন; যা দেশটির মোট ঋণের প্রায় ২০ শতাংশের সমান। সবদিক দিয়ে ভারতকে পাশ কাটিয়ে চীনমুখী অবস্থানে রয়েছে মালদ্বীপের বর্তমান সরকার। আর সে কারণেই ভারত-বিরোধী নানা পদক্ষেপ লক্ষ্যণীয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *