নিজস্ব প্রতিনিধি :
অজ্ঞাতপরিচয় আহত এক বৃদ্ধ রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা যুবককে পুলিশের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করার অভিযোগে এক ট্রলিম্যানকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জাকির নামে ওই ট্রলিম্যানকে আটক করে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত অপর ট্রলিম্যান আলমগীর পালিয়েছেন।
ট্রলিম্যানের খপ্পরে পড়া লেগুনাচালক আরিফুল ইসলাম রাব্বি জানান, মিরপুরের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন কলাপট্টি এলাকায় তার লেগুনায় ধাক্কা লেগে আহত হন ওই ব্যক্তি। তার নামপরিচয় জানা যায়নি। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ তার গাড়িটি আটকে রেখে তাকে প্রথমে আহত ব্যক্তির চিকিৎসা করাতে বলেন। তখন সে ওই বৃদ্ধকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে পরে নিয়ে যান ঢাকা মেডিকেলে।
রাব্বি জানান, ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার পর দুই ট্রলিম্যান রোগীটিকে তাদের ট্রলিতে তোলেন। মাথায় আঘাত থাকায় চিকিৎসকরা সিটিস্ক্যান করাতে বলেন। তবে তার কাছে টাকা না থাকায় চিকিৎসককে অনুরোধ করলে তিনি ফ্রি করে দেন।
সিটিস্ক্যান করানোর পর রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা শেষে দাঁতের চিকিৎসার জন্য মিরপুর ডেন্টাল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। তখন রোগী নিয়ে জরুরি বিভাগ থেকে বের হওয়ার পর ওই দুই ট্রলিম্যান রাব্বির কাছে সিটিস্ক্যানের টাকা দাবি করেন। তবে তার কাছে টাকা না থাকার বিষয়টি আবারও জানালে তখন ওই দুই ট্রলিম্যান বলেন, টাকা না দিলে তোকে পুলিশে দেব। বারাবারি করলে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে।
এমন সময় ওই লেগুনা চালকের কান্নাকাটি দেখে লোকজন জড়ো হয়। জানাজানি হয় বিষয়টি। তখন কৌশলে ট্রলি রেখেই কেটে পড়ে এক ট্রলিম্যান। জাকির নামে অপরজনকে আটক করে হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা গেছে, জাকির নামে অভিযুক্ত ট্রলিম্যান জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার মো. রিয়াজকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ট্রলিতে রোগী বহন করে আসছেন। হাসপাতালের নিয়োগপ্রাপ্ত কেউ নন তিনি। আর ডেইলি বেসিকে নিয়োগ পাওয়া আলমগীরের ডিউটি ৩য় তলার কেবিন ব্লকে হলেও অতিরিক্ত টাকা উপার্জনের জন্য বিকেলে জরুরি বিভাগে ট্রলিতে রোগী বহন করে।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, অজ্ঞাতনামা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা এক যুবকের কাছে টাকা দাবি করায় এক ট্রলিম্যানকে আটক করা হয়েছে। তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আটক ট্রলিম্যান জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজকে ম্যানেজ করে কাজ করে বলে নিজেই জানিয়েছে।
Leave a Reply