আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গাজা উপত্যকায় সুদীর্ঘ এক সুড়ঙ্গের খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছে ইসরাইল। বলা হচ্ছে, সীমান্ত এলাকায় এ পর্যন্ত হামাসের যেসব সুড়ঙ্গের সন্ধান মিলেছে, সেসবের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়। চার কিলোমিটার বা আড়াই মাইল লম্বা। আইডিএফ দাবি করছে, এরেজ সীমান্ত ক্রসিং থেকে কয়েকশ’ মিটার দূরে সুড়ঙ্গটির প্রবেশ মুখের খোঁজ পেয়েছে। তবে এটি দেখার পর রীতিমতো ধাঁধায় পড়ে গেছে তেল আবিব।
এ ঘটনা যদি সত্যিও হয় তাতে বোঝাই যাচ্ছে, হামাসের দূরদর্শিতা কতটুকু। ইসরাইলের চোখ ফাঁকি দিতে এমন নির্মাণশৈলী দেখে চোখ কপালে উঠবে যে কারোই। আর হামাসের এই দূরদর্শিতার কাছেই বার বার হেরে যাচ্ছে ইসরাইল। তবে ৭ অক্টোবরে ইসরাইলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির নির্মূলে আটঘাট বেঁধেই নেমে পড়েছে, ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স- আইডিএফ।
চলছে তুমুল যুদ্ধ। কখনও হামাসের তৈরি টানেলে সমুদ্রের পানি ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, তো কখনো টানেল ধ্বংস, কিংবা অস্ত্র উদ্ধারের সংবাদে সয়লাব আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। তবে টানেলের বিস্তারিত নকশা বা অবস্থান এখনো নাগালের বাইরে। এবার গাজা উপত্যকায় হামাসের সবচেয়ে বড় টানেল খুঁজে পাওয়া দাবি করেছে ইসরাইল। গাজার সীমান্ত এলাকার কাছেই এই সুড়ঙ্গের অবস্থান বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
বাহিনীটি বলছে, এরেজ সীমান্ত ক্রসিং থেকে কয়েকশ’ মিটার দূরে এ সুড়ঙ্গটির প্রবেশমুখের সন্ধান মিলেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এই সুড়ঙ্গের ভেতরে কি রয়েছে, তাও জানিয়েছে ইসরাইল। এমনকি কীভাবে সুড়ঙ্গের খোঁজ পেলো তারা, সেটিরও বিস্তারিত তুলে ধরেছে আইডিএফ।
তারা বলছে, সুড়ঙ্গের ভেতরটা বেশ বড়। এর মধ্য দিয়ে একটি গাড়ি অনায়াসে চলাচল করতে পারবে। এটির দৈর্ঘ্য চার কিলোমিটারের বেশি বা প্রায় আড়াই মাইল। এমন একটি সুড়ঙ্গ বানাতে বহু বছর লাগতে পারে। এতে খরচ হতে পারে কোটি কোটি টাকা। এত বড় সুড়ঙ্গে তৈরিতে মাস্টারমাইন্ড ছিলেন মোহামেদ ইয়াহিয়া। হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ভাই তিনি। এই ইয়াহিয়া সিনওয়ার গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের রকেট হামলার মাস্টারমাইন্ড।
এই সুড়ঙ্গের দেয়াল কংক্রিট ও লোহার তৈরি। আইডিএফ বলছে, এ পথেই যোদ্ধাদের নিয়ে সীমান্ত এলাকায় আসতো ছোট্ট গাড়ি। এর গভীরতা ৫০ মিটার। ভেতরে এটি ১০ ফুট উঁচু। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি বলেছেন, এ পর্যন্ত তারা যে টানেল পেয়েছে, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে বড়। তবে গত ৭ অক্টোবরের হামলায় এই টানেল ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা- তা জানানো হয়নি।
বিভিন্ন সূত্রের খবরে বলা হয়েছে, হামাসের প্রায় ৪০ হাজার যোদ্ধা রয়েছে। তারা কয়েকশ’ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৮০ মিটার পর্যন্ত গভীর সুড়ঙ্গের সুবিশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে গাজার চারপাশে ঘুরে বেড়াতে পারে। বহু বছর ধরে এই সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে হামাস। গাজায় যে টানেল নির্মাণ করা হয়েছে, সেগুলো ভূপৃষ্ঠ থেকে অন্তত একশ’ ফুট গভীরে এবং এর প্রবেশপথগুলো সাধারণ ঘরবাড়ি, মসজিদ, স্কুল কিংবা এমন ভবনে যেখানে সাধারণ মানুষের সমাগম হয়। মূলত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সদস্যদের যেন চিহ্নিত করা না যায় সেজন্য এগুলো ব্যবহার করে তারা।
Leave a Reply