আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গাজা উপত্যকায় সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী- হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শুরু থেকেই ইসরাইলের জন্য গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র বাহিনী হিজবুল্লাহ। প্রায় প্রতিদিনই ইসরাইলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে হিজবুল্লাহর সেনারা।
রোববার দিনের শুরুতে লেবানন সীমান্তের কাছে ইসরাইলি বসতি কিবুতজ লক্ষ্য করে একটি কামান-বিধ্বংসী মিসাইল ছুঁড়েছে হিজবুল্লাহ। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও, সেখানকার একটি অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর আল জাজিরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরা একটি ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, হিজবুল্লাহ’র ছোঁড়া মিসাইলের আঘাতে কিবুতজের একটি অডিটোরিয়ামের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন সরকার।
তবে, আইডিএফ বলেছে, উত্তর ইসরাইলে হামলার পর দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর একটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে তারা হামলা চালিয়েছে। কামানের গোলা ছুঁড়ে হিজবুল্লাহকে জবাব দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে আইডিএফ দাবি করেছে, হিজবুল্লাহর একটি মিসাইল সীমান্ত অতিক্রম করেছে, বাকিগুলো করেনি।
ইসরাইলের উত্তর সীমান্তে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর উপস্থিতি আর সহ্য করা হবে না, এমনি হুমকি দিয়ে আসলেও তেল আবিব এই মুহূর্তে আরেকটি যুদ্ধ শুরু করতে চাইছে না। উল্লেখ্য, হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের শুরু থেকেই সীমান্তে ইসরাইলি ভূখণ্ডে সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা করে আসছে হিজবুল্লাহ।
হিজবুল্লাহর অন্যতম মুখপাত্র হাজি মোহাম্মদ আফিফ বলেন, আমরা এই যুদ্ধের অংশ হয়ে গেছি। হিজবুল্লাহ তার মোট শক্তির মাত্র পাঁচ শতাংশ ব্যবহার করছে। এমনকি হামাসও এখন পর্যন্ত তার পূর্ণ শক্তি ব্যবহার করছে না। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন ও সংহতি জানিয়ে যুদ্ধের বর্তমান গতির সঙ্গে তাল রেখে চলছি।
উল্লেখ্য, ইসরাইলে গেলো ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যোদ্ধাদের সাঁড়াশি হামলার প্রশংসা করেছিলেন হিজবুল্লাহ প্রধান শেখ হাসান নাসরাল্লাহ। এরপর হামাস–ইসরাইলের সংঘাতের পর থেকে প্রায়ই ইসরাইলের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা চালাচ্ছে গোষ্ঠীটি।
সামরিক শক্তির দিক দিয়ে হিজবুল্লাহ বেশ শক্তিশালী। ইসরাইলের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে গত শতকের আশির দশকে হিজবুল্লাহ গড়ে তোলে ইরান। লেবাননে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বাহিনীর ওপর বিভিন্ন সময়ে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে গোষ্ঠীটি। লেবানন থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারে কৃতিত্ব নেয় হিজবুল্লাহ।
দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর হাজার হাজার যোদ্ধা ও ক্ষেপণাস্ত্রের বড় ভাণ্ডার রয়েছে। লেবানন–ইসরাইল সীমান্তে বিরোধপূর্ণ এলাকাগুলোয় ইসরাইলের উপস্থিতির বিরোধিতা করে আসছে গোষ্ঠীটি। অন্যদিকে, হিজবুল্লাহকে নির্মূল করতে বিভিন্ন সময়ে দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।