আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আত্মহত্যার অনুমতি চেয়ে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের উদ্দেশে চিঠি লিখেছেন এক নারী বিচারপতি। যৌন হয়রানির শিকার হয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) এ চিঠি লেখেন তিনি। বারাবাঙ্কিতে ওই নারীর আগের পোস্টিংয়ের সময় জেলা জজ ও তার সহযোগীদের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে এই খোলা চিঠি। এটি প্রধান বিচারপতির নজরে আসলে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশের বান্দা জেলার সেই নারী বিচারক প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে তার খোলা চিঠিতে লিখেছেন, দয়া করে মর্যাদাপূর্ণ উপায়ে আমার জীবন শেষ করার অনুমতি দিন। আমার জীবন শেষ হোক।
একজন জেলা জজ এবং তার সহযোগীদের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন— এমন অভিযোগ করে তিনি লিখেছেন, যৌন হয়রানির সর্বোচ্চ মাত্রার শিকার আমি হয়েছি। আমার সঙ্গে আবর্জনার মতো আচরণ করা হয়েছে। নিজেকে নর্দমার কীট মনে হচ্ছে।
চিঠিতে তিনি আরও বলেছেন যে, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে হাইকোর্টের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির কাছে অভিযোগ দায়ের করার পর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই তদন্তকে ‘প্রহসন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন সেই নারী বিচারক। তিনি লিখেছেন, ‘তদন্তের সাক্ষীরা জেলা জজের অধস্তন। সাক্ষীরা তাদের বসের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে— কমিটি কীভাবে এ আশা করে তা আমার বোধগম্যতার বাইরে।’
চিঠিতে নারী বিচারক আরও বলেন যে, সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতের জন্য অভিযুক্ত বিচারকের বদলির অনুরোধ করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার সেই আবেদন সুপ্রিম কোর্ট মাত্র আট সেকেন্ডেই খারিজ করে দিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের সচিব অতুল এম কুর্হেকার এলাহাবাদ হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি লিখেছেন।
নারী বিচারকের অভিযোগ সম্পর্কে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালের মধ্যে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছ থেকে প্রতিবেদন চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের সচিব অতুল এম কুর্হেকারকে গতকাল রাতে ফোনে জানানো হয়েছে যে, প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় নিজেও খোলা চিঠিটির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে নোট নিয়েছেন।
দুই পৃষ্ঠার চিঠিতে নারী বিচারক লিখেছেন, আমার আর বাঁচার ইচ্ছা নেই। আমি গত দেড় বছরে একটি চলতে ফিরতে পারা লাশে পরিণত হয়েছি। এই নিষ্প্রাণ দেহকে আর বহন করার কোনো উদ্দেশ্য নেই। আমার জীবনের কোনো উদ্দেশ্যই আর বাকি নেই।
Leave a Reply