আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
হামাসকে শায়েস্তা করার অজুহাতে গোটা গাজার ফিলিস্তিন নাগরিকদের জন্য অসীম দুর্ভোগ বয়ে আনছে ইসরাইল। হামাসকে দমন করতে না পেরে দিনকে দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে আইডিএফ। মার্কিন সহায়তায় অত্যাধুনিক সমর শক্তি নিয়ে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের মারছে ইসরাইল।
গোটা বিশ্ব যখন বলছে, হামাসকে দমন করার মূল্য সব ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষের ক্রমাগত দুর্ভোগের মাধ্যমে হতে পারে না, তখন নেতানিয়াহুর অনুগত আইডিএফ যেন আরও পাশবিক হয়ে উঠছে। তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না গাজার স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে নারী-শিশুরাও।
দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরাইলি অভিযানের কারণে, যেমন মানুষ মারা যাচ্ছে, একের পর এক ভবন ধসে পড়ছে, একই সময় ভয়াবহ খাদ্য সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। স্বয়ং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতি সংঘ সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি গাজার পরিস্থিতিকে ‘পৃথিবীতে নরক’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
গাজার ২৩ লাখের প্রায় অর্ধেক মানুষ না খেয়ে থাকছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে একটি ভিডিও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাল হওয়া এই ডিভিও ছবিতে ফুঁটে উঠেছে যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর দুর্ভোগ এবং খাবার সংগ্রহ করতে কঠিন অবস্থা।
ইনস্টাগ্রামে দুয়া তাইমা নামের এক আরব নারীর পোস্টে শেয়ার কথা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, অন্য আরো কয়েকটি শিশুর সাথে খাবার সংগ্রহ করতে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলো একটি ছোট্ট শিশু। দীর্ঘ লাইন এগোতে এগোতে তার খাবার গ্রহণের পালা যখন আসে, ঠিক তখনই শেষ হয়ে যায় খাবার।
শিশুটি তখন হতাশ হয়ে পড়ে। এদিক ওদিক তাকাতে থাকে। ঠিক ওই সময়েই আরেকটি শিশু তার নিজের খাবার থেকে ওই শিশুর পাত্রে কিছুটা তুলে দেয়। শিশুটি তখন খুশি মনে দৌড়াতে দৌড়াতে তার তাঁবুতে ফিরে গিয়ে তার মাকে দেখায়, কী খাবার সে এনেছে।
শুধু এমন একটি শিশুই নয়, এই মুহূর্তে হাজার হাজার শিশুর অভুক্ত থাকার চিত্র ফুটে উঠেছে এই ভিডিওটির মাধ্যমে। গাজার উদ্বাস্তু প্রতিটি শিশুর চোখে মুখে এখন বিব্রতকর অবস্থা এবং বিস্ময়ের ভাব। অব্যাহত যুদ্ধের মধ্যে বেঁচে থাকা যে, কতটা দুর্বিষহ- তার কিছুটা আঁচ পাওয়া যায় এই ছবিতে।
জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, ইসরাইলের হামলার মুখে গাজার ২৩ লাখের প্রায় অর্ধেক মানুষ না খেয়ে থাকছে। ওই এলাকাটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় সেখানে খাবার পৌঁছানো যাচ্ছে না। ক্ষুধার্ত মানুষরা গাড়ি থামিয়ে খাবার নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিচ্ছে। ফলে খাবার সরবরাহ চালু রাখাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে।