স্পোর্টস ডেস্ক:
খুব কাছে গিয়ে এবারও হেরে গেলেন মেসি। না সেটা কোনো ফুটবল খেলায় নয়, কোনো ফুটবলারের কাছেও নয়। জার্সি বিক্রির দৌড়ে এ যাত্রায় বাস্কেটবল কিংবদন্তি মাইকেল জর্ডানের রেকর্ডটা ছাড়িয়ে যাওয়া হলো না বিশ্বজয়ী আর্জেন্টাইনের। নিলামের শেষ দিনের শেষ মুহূর্তে ব্যবধান ছিল মাত্র ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলারের।
‘যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা’ থেকে উৎপাদিত ধুলোয় ধূসর আফগানিস্তান থেকে পরিবারের সাথে পাকিস্তানে পালিয়ে বাঁচা সেই পাঁচ বছরের শিশু মুর্তজার কথা মনে আছে? পলিব্যাগ কেটে আকাশি জার্সির গায়ে যে লিখেছিলো লিওনেল মেসির নাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে সেই খবর ঠিকই পৌঁছে গিয়েছিল গ্রহের সেরা ফুটবলারের কাছেও। দু’জনের দেখাও হয়েছিল। এক জার্সির জোর কতো হতে পারে তার প্রমাণ অনেকটা মিলিয়ে গিয়েছিলো সেবারই।
মেসি-মুর্তজার গল্পটা যখনকার, সে সময় তো এলএমন টেনের অনেক কিছুই অর্জনের বাকি। বলতে গেলে বেশিরভাগটাই। এরপর তো কোপা আমেরিকা আর বিশ্বকাপ জয় করেছে শ্রেষ্ঠত্ব প্রশ্নে অবসান ঘটিয়েছেন সব বিতর্কের। আর তাই ওই আকাশি নীল জার্সি পেছনে যখন ১০ সংখ্যাটা লেখা হয়, তখন তার শক্তি চলে যায় আধ্যাত্মিক পর্যায়ে! আর সেটা যদি মেসি পরে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে থাকেন, যেটা তিনি জিতেছেনও, তার মূল্যমান নির্ধারণ করা আদৌ সম্ভব না। আর সেই জার্সি যদি কাতার বিশ্বকাপে ফাইনালের হয় তার দাম তো হু হু করে উপরে ওঠার কথাই।
প্রথম বিডেই সেটার দাম উঠেছিল ৫ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। ফার্স্ট বিডে এর আগে কোবে ব্রায়ান্টের এমভিপি ২০০৭-০৮ সিজনের জার্সির দাম ওঠে ৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন, বাবে রুথের নিউ ইয়র্ক ইয়াঙ্কিসের জার্সির ৫.৬ মিলিয়ন, লেবর্ন জেমসের ২০২৩ এনবিএ ফাইনালসের জার্সির ৩.৬ মিলিয়ন দাম উঠেছিলো ফার্স্ট বিডেই।
পয়লা বিডেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেলেও টোটাল দামে বেশ ক’জনের পেছনেই পড়ে গেছে মেসির কাতার বিশ্বকাপের জার্সি। কাউন্ট ডাউন শেষ হওয়া পর্যন্ত সেটার দাম ওঠে ৭ দশমিক আট মিলিয়ন ডলার। সাড়ে ছয় মিলিয়ন ডলারের পর বিড হয়েছে মাত্র তিনটা। রেকর্ডটা বাস্কেটবল লিজেন্ড মাইকেল জর্ডানের কাছেই। ১৯৯৮ সালের এনবি ফাইনালসের গেম ওয়ানে শিকাগো বুলস জার্সিটার দাম উঠেছিল ১০ দশমিক এক মিলিয়ন ডলার। তবে ফুটবলে এমন স্মৃতিময় জার্সিকে এগিয়ে রাখতে মেসি আর মারাদোনা- দুই আর্জেন্টাইনের নামটাই আগে আসবে। গেলো বিশ্বকাপের ফাইনালে পড়া জার্সির পাশাপাশি মেসির ২০১৭ এল ক্লাসিকো জার্সি বিক্রি হয় সাড়ে ৪ মিলিয়নে। মারাদোনারটা অবশ্য ছাড়িয়ে গিয়েছিলো ৯ মিলিয়নের গণ্ডি।
নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সাথেবি এবার একসাথে মেসির ছয় জার্সি তুলেছিলো বিক্রির জন্য। ফাইনালের জার্সির পাশাপাশি ছিলো, এলএম টেনের ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনাল, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রাউন্ড অব সিক্সটিন আর গ্রুপ পর্বের টোটাল তিন ম্যাচের দুটি কিট।