বিনোদন ডেস্ক:
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)। একসময় ব্যাপক জমজমাট থাকত প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি প্রতিদিনই নতুন সিনেমার শুটিংয়ে অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলাকুশলীদের পদচারণায় উৎসবমুখর হয়ে উঠতো ফ্লোরগুলো। কিন্তু গত তিন-চার বছর প্রতিদিনের চেনা রূপ যেন একটু একটু করে হারাতে থাকে। দীর্ঘদিন পর অবশেষে প্রাণ ফিরে পেল এফডিসি।
ধীরে ধীরে এফডিসি জনশূন্য হয়ে পড়ে। এতে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটির ক্যান্টিনও। শুধু পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি, প্রযোজক সমিতিসহ চলচ্চিত্র সংগঠনগুলোর অফিসে হাতে গোনা কয়েকজন নেতাকর্মীকে দেখা যেত। বলা যায় একদমই প্রাণহীন হয়ে পড়েছিল। তবে বর্তমানে বেশ কয়েকটি ফ্লোরেই চলছে সিনেমাসহ বিভিন্ন চ্যানেলের নানান আয়োজনের শুটিং।
এ প্রসঙ্গে এফডিসির চিফ অব ফ্লোর অ্যান্ড সেট এবং গণসংযোগ কর্মকর্তা হিমাদ্রী বড়ুয়া বলেন, গত সপ্তাহে প্রতিদিনই শুটিং হয়েছে। কখনও সিনেমার, কখনও টেলিভিশনগুলোর নাটক, রিয়ালিটি শো, কখনও বা আবার বিজ্ঞাপনচিত্রের। আর এফডিসিতে প্রাণ ফেরায় আমরাও ভীষণ খুশি।
তবে আজ শুক্রবার ছুটির দিন। তাই তেমন কোনো শুটিং নেই। কিন্তু আগামী রবিবার থেকে প্রতিষ্ঠানটি আবার কর্মমুখর হয়ে উঠবে আশা করছি।
জানা গেছে, নানান কারণেই দীর্ঘদিন ধরে এফডিসির বেতন অনিয়মিত। তবে এখন থেকে নিয়মিত শুটিং চললে বেতন আবার নিয়মিত হয়ে যাবে বলেও আশা করেন এফডিসির কর্মকর্তারা।
হিমাদ্রী বলেন, ফ্লোরগুলোতে নিয়মিত শুটিং চললে ভালো অংকের ভাড়া পাওয়া পাওয়া যায়। পাশাপাশি পার্টিগুলো এফডিসির ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে আয়ের পরিমাণটা আরও বৃদ্ধি পায়।
তিই আরও বলেন, একসময় দিনে পাঁচ-ছয়টা সিনেমার শুটিং চলত এফডিসিতে। তবে মাঝখানে এতোটাই মন্দা অবস্থা গিয়েছে যে, সপ্তাহে একটি সিনেমার শুটিংও হতো না বা হয়নি। বিশেষ করে করোনার সময়টা খুব খারাপ গেছে। সামনেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আমরা আশা করছি যে, নির্বাচনের পর আবার সিনেমা নির্মাণের ধুম পড়বে এসডিসিতে। তখন ফ্লোরগুলো আবার আগের মতো কর্মমুখর হয়ে উঠবে।
বর্তমানে এফডিসিতে ক্যান্টিনটিও জনশূন্যতায় রয়েছে জানিয়ে এর কর্ণধার আজাদ বলেন, করোনার সময় থেকে ক্যান্টিনটি পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলাম আমি। তবে এতো দিন শুধু আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এই একটা সপ্তাহ ভালো চলেছে। ভবিষ্যতেও যদি এভাবে চলে তাহলে হয়তো কিছুটা লাভের মুখ দেখতে পাব।
দীর্ঘদিন ধরেই এফডিসিতে অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে কাজ করেন রাজু। পাশাপাশি শুটিং ইউনিটে খাবার পানি সরবরাহ করেন তিনি।
রাজু বলেন, গত সপ্তাহে আমার ভালো আয় হয়েছে। বড় বড় দুটি সিনেমার শুটিং হয়েছে। আমাদের অনেক অতিরিক্ত শিল্পীও কাজ পেয়েছেন। সবার মুখে হাসি। আশা করছি এফডিসি আবার আগের রূপে ফিরে আসবে।