রবিউল, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মিলনস্থল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্যমঞ্চের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অফিস কক্ষ বরাদ্দ ও উদ্বোধন করা হয়েছে।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নং কক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন, টিএসসিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল, ইবি ঐক্যমঞ্চের আহ্বায়ক ইয়াশিরুল কবীর, সদস্য সচিব রাবেয়া সহ প্রায় ২২ টার মত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এসময় বাকী বিল্লাহ বিকুল বলেন, আমরা আনন্দিত যে এই মহতি উদ্যোগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় এবং সংস্কৃতি মনস্ক সুযোগ্য শিক্ষক আমাদের কন্সপারেটিভ খুবই মেধাবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সেলিনা নাসরীন ম্যাডাম উপস্থিত রয়েছেন। আমি টিএসসিসির পক্ষ থেকে ম্যাডামকে স্বাগত জানাচ্ছি, আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই আমরা সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে একরকম বরাদ্দ দিতে পারিনি। এটা অত্যান্ত দুঃখজনক। নানা কারণেই সেইটা হয়ে উঠেনি, অনেকের আন্তরিকতা থাকলেও সেটা হয়তো পারেননি। তো আমরা সে জায়গাটাকে পরিষ্কার করলাম এটা নিয়ে অবশ্যই আমাদের গর্ব আছে। আমি আসার সময় ম্যাডামকে বলতেছিলাম যে আপনার সময় এবং আমার সময়ে কাজটি করে নিতে পারলাম। এটা করে নেওয়ার মানে হলো আমরা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলাম এবং এটা দেওয়াতে আমাদের কোনো কার্পণ্য ছিলো না। ম্যাডামের সাথে বারংবার কথা বলেছি, "ম্যাডাম বলছে বিপুল যত দ্রুত সম্ভব আমরা এই কাজটি করতে চাই"। আসলে টিএসসিসি হলো আমাদের সন্তানদের অন্যতম জায়গা, আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রিয় জায়গা। ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমোতাবেক নিয়ম মেনে আমরা রুমগুলো বরাদ্দ করবো। আমি তো থাকছি, আছি।
ছাত্র উপদেষ্টা এবং হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র একাডেমিক কার্যক্রম চলবে না, সাথে সাথে এটাকে সার্বজনীন করার যে ব্যবস্থা বিভিন্ন সংগঠনগুলো করে থাকে, খেলাধুলা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক চর্চা যেগুলোর মাধ্যমে আমাদের কৃষ্টি, কালচার, সভ্যতা যুগ যুগ টিকে থাকে বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। আর এতেই আমাদের ছাত্রদের সুযোগ দিতে চাই, এখানে অনেক সংগঠন আছে, প্রতিদিন আমরা যতো সিগনেচার করি তারা কিন্তু বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে কিন্তু অনেক কষ্ট করে করছে, একটা মিটিং রুম, একটা সাক্ষাৎকার রুম, তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট একটা জায়গা নেই, আমতলা-জামতলায় করতে হয়, খেলার মাঠে করতে হয়। এতো পুরাতন একটা বিশ্ববিদ্যালয় এটা আমাদের অবশ্যই আকাঙ্খা, প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে আর আমাদের এখানের ইনফ্রাকচারাল ডেভলপমেন্ট অলরেডি শুরু হয়েছে, টিএসসিসিতে যখন ক্লাসরুম থাকবে না ফর্মাল তখন আমার মনে হয় অনেক সংগঠনকে তাদের ন্যাচার অনুযায়ী আলাদা আলাদা রুম বরাদ্দ সুযোগ হবে তার সূচনা আজ হলো, একটা রুমের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এটা বৃদ্ধি পাবে। আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি এধরনের কালচারে সংযুক্ত থাক। তবে আমি একটা কথা বলবো যে একটা রুম তোমরা পেলে, একটা রুম ব্যবহারের যে বিধিমালা এখন বিধিমালা শুধু কাগজে কলমে হয়না, সভ্যভাবে, ভদ্রভাবে সবাই একত্রিত হয়ে গণ্ডগোল না করে, কোন রেশারেশি বা একটা সংগঠন এতটা অধিকার পালন করলো, আমরাদের এই জায়গাটা দিলো না, এটা তোমরা কতৃপক্ষের সাথে কথা বলো, তোমাদের টিএসসির একটা কমিটি আছে, ডিরেক্টর মহোদয় আছেন তাদের সাথে কথা বলে রুমটি ব্যবহার করো, আমি বলতে চাচ্ছি এটির সর্বোচ্চ ব্যবহার যাতে হয়। আমাদের কিন্তু কক্ষ সংকট রয়েছে, কিছু নতুন বিভাগ রয়েছে যেখানে একটা কক্ষে একাধিক শিক্ষককেও বসতে হচ্ছে, টিচারেরও বসার রুম নেই, একটা কক্ষে অনেক ছাত্রদের ক্লাস নিতে হচ্ছে। তার মানে এগুলো সবই সীমাবদ্ধতা।
সীমাবদ্ধতার মধ্যে এতটুকু পাওয়া কিন্তু কম পাওয়া না, সেজন্য এটিকে প্রোপার ইউটিলাইজ করো, তোমরা এটিকে রেগুলার ব্যবহার করো, ভালোভাবে ব্যবহার করো।
ঐক্যমঞ্চের আহ্বায়ক ইয়াশিরুল কবীর বলেন, ঐক্যমঞ্চ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি জোটবদ্ধ সংগঠন। এতে প্রায় ২২ টির অধিক সংগঠন যুক্ত আছে। সকল সংগঠনের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা ছিল তাদের একটি নির্দিষ্ট কক্ষের। দীর্ঘদিন পর সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটল আজ।
এতে করে সংগঠন গুলোর শিক্ষার্থী কেন্দ্রীক কার্যক্রম গুলো আরো বৃদ্ধি পাবে এবং সংগঠন গুলো আরো প্রগতিশীল সংস্কৃতি চর্চায় উজ্জীবিত হবে।
ঐক্যমঞ্চের সদস্য সচিব রাবেয়া বলেন, ঐক্যমঞ্চের নির্দিষ্ট কক্ষ পাওয়াটা আমাদের কাছে খুবই আনন্দের, এখন থেকে ঐক্যমঞ্চের আওতাধীন সকল সংগঠন তাদের কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে সক্ষম হবে এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একধাপ এগিয়ে নিবে।