আরমান খান যশোর জেলা প্রতিনিধি:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চার জেলায় ১৮ জনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। এরমধ্যে ঝিনাইদহে সাতজনের, মাগুরায় তিনজনের, বাগেরহাটে একজনের এবং চুয়াডাঙ্গায় সাতজনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট এলাকার রিটার্নির অফিসাররা। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে ত্রুটির কারণে সোমবার এসব মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
ঝিনাইদহ থেকে রাজিব হাসান জানিয়েছেন, জেলার চারটি আসনে ৩৪ জনের মধ্যে সাতজনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোব ও সোমবার জেলা প্রশাসকের হলরুমে যাচাই বাছাইকালে এ তথ্য জানান জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম ।
যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তারা হলেন ঝিনাইদহ-১ আসনে বিএনএফের আবু বক্কর, স্বতন্ত্র শিহাবুজ্জামান, ঝিনাইদহ-২ আসনের সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মোহাম্মদ বদরুল হায়দার, সুপ্রিম পার্টির নজরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ-৩ আসনের স্বতন্ত্র টিএম আজিবর রহমান ও নাজিম উদ্দিন এবং ঝিনাইদহ-৪ আসনের জাকের পার্টির ইসাহাক আলী। রির্টানিং অফিসার আরও জানান, ঋণ খেলাপি, হলফ নামা অসম্পূর্ণ রাখা এবং প্রয়োজনীয় ভোটারের সমর্থন না থাকায় এসব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিল করার সুযোগ পাবেন।
মহম্মদপুর থেকে এস আর এ হান্নান জানান, মাগুরার দুটি আসনে ১৫ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ এবং তিনজনের অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। সোমবার বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসক ও জেলা রির্টানিং অফিসার মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ প্রার্থীদের উপস্থিতিতে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। যাদের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে তারা হলেন মাগুরা-১ আসনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সঞ্জয় কুমার ভাদুরী, মাগুরা-২ আসনে স্বতন্ত্র মশিয়ার রহমান এবং কর্নেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দিন। সঞ্জয় কুমার ভাদুরী ঋণ খেলাপী হিসেবে মনোনয়নের অযোগ্য ঘোষিত হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিয়ার রহমান স্থানীয় ব্যাংক একাউন্টের কপি ও ঋণ সংক্রান্ত তথ্য সংযুক্ত না করার পাশাপাশি এক শতাংশ ভোটারের তথ্য ভুল দিয়েছেন। কাজী শরীফ উদ্দিন বর্তমান কর্মস্থল ত্যাগের উপযোগী প্রমাণপত্র দাখিল না করায় তার মনোনয়নপত অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। অবৈধ ঘোষণা হওয়া প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন বলে রির্টানিং অফিসার মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ জানিয়েছেন।
মোরেলগঞ্জ থেকে গণেশ পাল জানান, বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে আটজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাদের মধ্যে সোমবার চূড়ান্ত যাছাই বাছাইয়ে সাতজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী এম আর জামিল হোসাইনের মনোনয়নপত্রে ত্রুটি থাকায় তা অবৈধ ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন। এম আর জামিল হোসাইন বলেন, মনোনয়নপত্রে ভোটার তালিকায় ক্রমিক সংখ্যায় ভুল হওয়ায় তা অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। তবে, এক শতাংশ ভোটার তালিকা সঠিক রয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে তিনি আপিল করবেন বলে জানান।
আলমডাঙ্গা থেকে প্রশান্ত বিশ্বাস জানান, চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে বিভিন্ন ত্রুটির কারণে সাতজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। দুটি আসনে ২০ জন প্রার্থীর মধ্যে বৈধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন ১৩ জন প্রার্থী। অবৈধ হয়েছে সাতজনের মনোনয়নপত্র। সোমবার চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার ড. কিসিঞ্জার চাকমার সভাকক্ষে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই করা হয়। যাদের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষিত হয়েছে তারা হলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে তৃণমুল বিএনপির তাইজাল ইসলাম, স্বতন্ত্র জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ শামসুল আবেদীন (খোকন) ও আফরোজা পারভীন, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে স্বজতন্ত্র মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ (লন্টু), নুর হাকিম, নজরুল মল্লিক ও আব্দুল মালেক মোল্লা। জেলা রিটার্নিং অফিসার ড. কিসিঞ্জার চাকমা জানান, যাদের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে তারা আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার বরাবর আপিল শুনানির জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।