রবিউল, ইবি প্রতিনিধি:
শীতের আগমনী বার্তা সিকি দৃশ্যমান গোধূলীর সোনালী সূর্য অস্ত যেতেই মাঝারি কুয়াশার চাদরে আকড়ে ধরা অনিন্দ্য সুন্দর রূপে প্রকৃতি। শরতের শেষে পাতাঝরা হেমন্ত ঋতু কিছু বৈচিত্র্যময় আমেজ নিয়ে ক্যাম্পাসে শীতের আগমন ঘটিয়েছে। তন্মধ্যে শীতের বাহারি রকমের পিঠা ও খেজুরের রস-গুড়ের ঐতিহ্য রক্ষায় গাছিদের কষ্টার্জিত খেজুরের রস পরিবেশন অন্যতম।
শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ১৫ টাকায় এক গ্লাস খাঁটি খেজুরের রস বিক্রি করছেন ঝিনাইদহ, শৈলকূপা উপজেলার ত্রিবেণী বাজারের অদূর এক মেঠো পথের পাশে হোসেন মালিকা নামের এক গাছি।
প্রতিদিন ভোর ৫ টা থেকে বিক্রি শুরু করেন তিনি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। এসময়ের মধ্যে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতারা আসেন বলে জানান গাছি। বিশেষ করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের আনাগোনা বেশি লক্ষণীয়।
ব্যবসায়িক গাছি বলেন, আমি এক যুগ ধরে এ কাজ করে আসতেছি। রস বিক্রেতা হোসেন শাহ মালিকা বললে ত্রিবেণী থেকে দেখায় দেয়, খাটি না হলে এত জনপ্রিয় পেতাম না। বগুড়া, চুয়াডাঙ্গায় আমার বানানো গুড়ও যায়। ৭০ টা পর্যন্ত গাছ আছে। রাতে অনেকে কল করে অর্ডার দিয়ে রাখে, ভোরে এসে নিয়ে যায়। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেশি আসে।
কারণ জানতে চাইলে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চৌষট্টি জেলার পুলাপান থাকে, অধিকাংশ জেলায় খেজুরের রস পাওয়া যায় না। শখের বশত খেতে আসে। একবার খেয়ে নেশা ছাড়তে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে অমায়িক আচরণ আমাকে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করে। মনে হয় যেন বাড়িতে প্রতিদিন মেহমান আসছে।
এছাড়াও এ কাজ করে তিনি সংসার চালাতে পারেন বলেও স্বাধীকার করেন। দৈনিক ১০০০ থেকে ১৫০০ করে আয় হয়। নাইটে একটু নজরদারি রাখা ছাড়া সমস্যায় ভোগতেছে না বলে জানান।
এসময় উপস্থিত ওসামা নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে আমি মাত্র ৫ গ্লাস খাইছি, আরও খেতে মন চাচ্ছে। মামার কথা শুনে রাতে বলে রেখেছিলাম।ভোরে ৫-৬ জন এসে খেজুর রস খাওয়ার অভিযান চালাইছি। প্রথমবার এসে ভালোই লাগতেছে। সরাসরি গাছের পাশে এসে টাটকা রস খেতে পেরে শীতকালীন আমেজের ফিল পাচ্ছি।