ঝিনাইদাহ প্রতিনিধি প্রথম বুলেটিন
হার না মেনে অদম্য আত্মবিশ্বাসে এগিয়ে চলা এক অনুপ্রেরণার, নাম কুষ্টিয়ার মেয়ে তন্নী খাতুন।
অদম্য আত্মবিশ্বাসী ও মেধাবী শিক্ষার্থী তন্নী খাতুন। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়াই, তন্নী এখন সমাজের অনেকের কাছেই এক অনুপ্রেরণার নাম। দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী, কুষ্টিয়ার গ্রাম থেকে এখন কুষ্টিয়া জুড়েই হয়ে উঠেছেন পরিচিত। কিভাবে জীবনের নানা প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করে জীবনে সফলতা বয়ে আনা সম্ভব, সেটিই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি। নিজের চারপাশের নানা প্রতিকূলতাকে কখনো দুর্বলতা না ভেবে বরং ভালোবেসে সাজিয়েছেন জীবনের চলার পথ। আর তাইতো আজ তন্নী স্বপ্ন বুনছেন, একজন মানবিক মানুষ হয়ে মানুষের সেবা করার।
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের, ওমর আলী মিয়া ও শিউলী খাতুনের চার মেয়ের মধ্যে তন্নী সবার ছোট। পড়াশোনা করছেন শেখপাড়া দুখী মাহমুদ কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স থেকে। কর্মজীবনে তন্নী চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যাক্তা হিসেবে পাচ বছর সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। এর পাশাপাশি সামাজিক মানবিক কাজে সেন্টাল প্রোমোশন ম্যানেজার হিসেবে যুক্ত হয়ে কাজ করেছেন, ওয়ান ওয়ে স্কুল -এর সাথে। যে প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, অদক্ষ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা"।
তন্নী বলেন, আমি রিহ্যাবিলিটেশন অফ হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের একজন গর্বিত সদস্য। এর মুল লক্ষ্য অসহায়, বঞ্চিত, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ দের পাশে থাকা। ভি বি ডি কুষ্টিয়া জেলা এর সাথে যুক্ত আছি, যারা সমাজের বিভিন্ন কাজে মানুষ এর পাশে থাকে। এছাড়াও রক্ত নিয়ে কাজ করতে আমার ভিষণ ভালো লাগে; তাই যত গুলো রক্তের সংগঠন আছে তাদের সাথেও কাজ করে যাচ্ছি। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে নিরালস কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন সামাজিক কাজে সম্মাননা পেয়েছে, ক্রেস্ট সহ সাথে মানবিক কাজে জাগ্রত গুনীজন সম্মাননা এওয়ার্ড - দুই হাজার তেইশে পেয়েছে তন্নী খাতুন।
তরুণদের উদ্দেশ্যে তন্নী বলেন: নামক আমাদের লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে দেয় ৷নিজেকে নতুন দিগন্ত সফলতা আনতে হবে। আমি সামাজিক সংগঠন গুলোতে কাজ করতে যেয়ে অনেক কিছু শিখেছি। এমন টিম পেয়েছি যারা নিজের পরিবারের মতো, কাজের প্রাপ্তি হিসেবে সকল সদস্যদের দোয়া ও ভালোবাসা অতুলনীয়। সামাজিক সংগঠন গুলোর সাথে কাজ করতে গিয়ে পেয়েছি নতুন এক পরিবার, যেখানে শাসন, ভালোবাসা সকল কিছুই বিদ্যমান। আমার চব্বিশ বছরের পথ চলায় অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছি। আমি চাকরির পাশাপাশি এই সামাজিক সংগঠন গুলোর সাথে সময় দিতে ভিষণ ভালো লাগে। ভালোবাসার জায়গা থেকে আমি কাজ করি। অনেকেই বলে এত কাজ করার পরেও কিভাবে কাজ করো, আমি বলি যে কাজ ভালোবাসা দিয়ে করা যায় তাতে কোন সমস্যা সৃষ্টি হয় না। আলহামদুলিল্লাহ যেখানে চাকরি করি সু -নামের সাথে পাচ টা বছর কাটিয়ে দিলাম।
তন্নী আরো বলেন, আমার অনুপ্রেরণার নাম শাহরিয়ার ইমন ভাই। তিনি সহ আরো অনেকে আছেন, যাদের ঋণ কখনো শোধ দিতে পারবো না কারণ আমার খারাপ সময় গুলো তে তারাই আমার পাশে ছিলো। মোক্তার হোসেন ভাইয়ার অনুপ্রেরণা পেয়ে আমি এগিয়ে যাচ্ছি, হাজার বাধা আসলেও কিছু মনে হয় না। আমার সব থেকে বড় মোটিভেশনাল একজন মানুষ চপল আশিকুর ভাই, যে মানুষ টির কাজ দেখে আমি ভিষণ অনুপ্রেরণা পেয়ে থাকি। আমার সাথে আজ অব্দি যে মানুষ গুলো সাপোর্ট দিয়েছে তাদের ঋণ হয়তো বা কখনো শোধ দিতে পারবো না। ওই মানুষ গুলোর প্রতি আমার দোয়া রইল সব সময়। আমার বন্ধু বান্ধবী শুভাকাঙ্ক্ষী সবাই আমার পাশে আছে বলে, আজ অব্দি আমি অনেক বাধার পরেও নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
যে মানুষ গুলো আমার সব সময় সাপোর্ট করে আসে তারা মিতু,বর্ষা, তিন্নি, রাব্বি, ইব্রাহিম, রাকিব, উদয়,বন্যা, ফারিয়া, সাফায়েত সহ আরো অনেকেই যাদের ভালোবাসা আমার শক্তি।
সবার অনুপ্রেরণা ও দোয়ায় ভালো কিছু করতে চাই। তন্নীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। শত কষ্ট, দুঃখ আর প্রতিকূলতার সাথে যে তন্নী সংগ্রাম করে এতোটা পথ পার করেছে সেই তন্নী সামনের দিনগুলোতেও টিকে থাকতে পারবে সংগ্রাম করে এমনটাই আত্নবিশ্বাস তার। আগামীতেও সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে সেই আশাও ব্যক্ত করলেন অকুণ্ঠ ভাষায় মেধাবী এই তন্নী খাতুন ।