প্রথম বুলেটিন অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন স্ক্যামারের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। এতদিন আপনি নিশ্চয়ই ওটিপি শেয়ার করে বা কোনো অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে স্ক্যামের কথা শুনেছেন। তবে আজকাল আবার স্ক্যামাররা সিম সোয়্যাপ করেও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি করে ফেলছে। গত মাসের শুরুতেই নর্থ দিল্লির একজন আইনজীবী সিম সোয়্যাপ স্ক্যামারের শিকার হয়েছেন। আননোন নম্বর থেকে তিনবার মিসডকল পেতেই তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি হয়ে যায়।
তিনি জানান, অপরিচিত একটি ফোন নম্বর থেকে পরপর তিনটি মিসড কল আসে। তবে তিনি রিটার্ন ফোন করেননি। তারপরই ওই নারীর ফোনে একটি মেসেজ আসে। সেখানে লেখা অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। তবে চিন্তার বিষয় হলো তিনি কখনও কারো সঙ্গে ওটিপি বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করেননি। কিন্তু তারপরেও তার অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা গায়েব।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ধরনের প্রতারণার নাম ‘সিম সোয়্যাপ স্ক্যাম’। ফোনে মিসড কল আসা এবং পরবর্তীতে কোনো একবার সেই কল রিসিভ করলেই এই প্রতারণা কাজ করে। চক্রটি এভাবে আপনার ডুপ্লিকেট সিমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় এবং তা দিয়ে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে অন্য অনেক কিছুই ব্যবহার করে। কীভাবে এই প্রতারণা চক্র কাজ করে, কীভাবেই বা আপনি সুরক্ষিত থাকবেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক করণীয়গুলো-
যে ভাবে এই প্রতারণা চক্র কাজ করে?
এই প্রতারণা চক্র কীভাবে কাজ করে, তা জানতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে ওই নারীর সাথে ঠিক কী ঘটেছিল? ওই আইনজীবীর অভিযোগ, গত ১৮ অক্টোবর তার সাথে এ ঘটনা ঘটেছিল। স্থানীয় প্রশাসনকে তিনি জানান, কয়েক লাখ টাকা তার অ্যাকাউন্ট থেকে মুহূর্তের মধ্যেই গায়েব হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, মোট তিনবার একই নম্বর থেকে তার ফোনে কল আসে। পরবর্তীতে তিনি যখন অন্য একটি নম্বর থেকে কল ব্যাক করেন, তখন তাকে বলা হয় এটি কুরিয়ার সার্ভিসের ডেলিভারির নম্বর। ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তিনি অভিযুক্তের সাথে শুধু তার বাড়ির ঠিকানা শেয়ার করেছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন, বন্ধু কোনো উপহার পাঠিয়েছে এবং তিনি পেয়েও গিয়েছেন। তারপরেই তার ব্যাংক থেকে একটি মেসেজ আসে, সেখানে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
প্রশাসনের কর্মকর্তা জানান, তদন্তে ওই নারী ফোন থেকে কিছু অস্বাভাবিক ব্রাউজিং হিস্ট্রি লক্ষ্য করা যায়, যা তিনি কখনও করেননি। তিনি কিছু ফিশিং লিঙ্ক এবং কিছু UPI রেজিস্ট্রেশন টেক্স পেয়েছিলেন বলে ওই অফিসার উল্লেখ করেছেন। এখান থেকে একটি বিষয় বোঝা যায়, সিমটি দিয়ে প্রতারকরা ওই নারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়েই যাবতীয় কাজ করে। সেই তথ্য তারা কারো সহযোগিতায় মোবাইল নেটওয়ার্কে ব্যবহার করে ডুপ্লিকেট সিমের অ্যাক্সেস পেতে পারে।
সুরক্ষিত থাকার উপায়-
১. কখনও আপনার ব্যক্তিগত তথ্য কারো সাথে শেয়ার করবেন না।
২.বিভিন্ন ব্যক্তিগত নথি ও তার নম্বর অনলাইনে কোনো প্ল্যাটফর্মেই শেয়ার করবেন না।
৩.আপনার সিম কার্ড কাজ না করলে টেলিকম অপারেটরকে বিষয়টি জানান।
৪. ওটিপি কখনো ব্যাংকের কর্মী, ব্যাংকিং এজেন্টের সাথে ফোনে বা অনলাইনে শেয়ার করবেন না