মাবিয়া আক্তার মুকুল ইসলামী গবেষক প্রথম বুলেটিন
নুসাইবা সকালবেলা নামাজ পড়ে ছাঁদে গেল। ছাঁদের দরজা খুলতেই বেলি ফুলের মৌও মৌও ঘ্রাণে তার হৃদয় ভরে উঠলো। ও দৌড়ে বেলি ফুল গাছটার তলায় গেল। বেলি ফুলটা এখন একটু খানি ছাঁয়া দেয়। ওর অনেক প্রিয় এই বেলি ফুল গাছটা। পাঁচ বছর আগে নিজ হাতে এই বেলি ফুল গাছটা লাগিয়ে ছিল। ও ছাঁদে আরো অনেক গাছ লাগিয়ে ছিল তার মধ্যে বেলি ফুল গাছটা এখনো রয়ে গেছে। ও নিচে পড়া কিছু বেলি ফুল উঠিয়ে তার ঘ্রাণ শুকলো। তারপর নিচে পড়া সব বেলি ফুলগুলো নিয়ে ঘরে আসলো। ও বেলি ফুল দিয়ে একটা মালা গেঁথে হাতে বেছ পরল। সুলুম সুলাইমান ওঠার আগেই বেলিফুলের মালাটা হয়তো গুযাতে হবে নয়তো ফেলে দিতে হবে ।কারণ ওরা দেখলে কান্না করবে। একজন নিলে আর একজনও নিতে চাইবে।ও নিচে এসে রান্না চড়িয়েছে। আজ বিরিয়ানি রান্না করবে। ওর হাতের বিরিয়ানি এ পরিবারের সবাই অনেক পছন্দ করে। ফজরের নামাজ পড়ে লোকমান ঘরে এলো। লোকমানের মনটা আজ অনেক ফুরফুরে কারণ আজ তার ঘরে তার বউ আছে।
লোকমান ঘরে এসে রান্না ঘরে প্রবেশ করল। নুসাইবা পিছন ফিরে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে ইয়া আল্লাহু বলে চিৎকার দিল। লোকমান নুসাইবার মুখ আটকে ধরল।
লোকমান: আব্বা আম্মা ঘুমিয়েছে ভাবে কেউ চিৎকার দেয়?
নুসাইবা: হঠাৎ করে তোমাকে দেখে ভয় পেয়ে গেছি।
লোকমান: কি রান্না করো?
নুসাইবা: আপনাদের পছন্দের কিছু একটা।
লোকমান: বিরানি রান্না করো না ।
নুসাইবা মুচকি হাঁসলো।
হুজাইফা আজ হুমায়রাকে নিয়ে ডাক্তার কাছে গিয়েছে। গাইনি ডাক্তার। কিছুদিন আগে মিলহানা ওকে ডাক্তার কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। কারণ এবার সিজারের সময় ও অসুস্থ থাকবে যার কারনে হুমায়রার বাচ্চা প্রস্রাব করতে কষ্ট হতে পারে। এ কারণে ও চায় শুরু থেকেই হুমায়রা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে রাখুক। ডাক্তার হুমায়রা কে টেস্ট করে দেখা করতে বলল। হুমায়রা এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে পাঁচ ছয়টা টেস্ট করল।
হুমায়রা: বিরক্তি হয়ে গেছিলাম।
হুজাইফা: হুম কি ভির আল্লাহ গো।
হুমায়রা: সব থেকে বিরক্তি লেগেছিল যখন মহিলা গুলো পড়ে এসে টাকা দিয়ে ঢুকে যাচ্ছিল।
হুজাইফা: জানো ওদের মধ্যে অনেকে এটা জানেই না যে ওভাবে ঢুকে যাওয়াটা ঘুষ দেওয়ার শামিল। ওটা কত্ত বড় অন্যায়।
হুমায়রা: হায় যদি এ উম্মা বুঝতো।
হুজাইফা বিকেল বেলা রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারের সাথে দেখা করতে এলো। হুজাইফা রিপোর্টগুলো ডাক্তার কাছে দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। ডাক্তার: সম্ভবত আপনার স্ত্রীর মাথায় কয়েক বছর আগে একটা অপারেশন হয়েছিল।
হুজাইফা: হ্যাঁ পাঁচ বছর আগে।
ডাক্তার: অপারেশন করার ব্যাপারে ডাক্তার কি বলেছিল এটা চিরতরের জন্য চলে যাবে?
হুজাইফা: ডাক্তার বলেছিল আপাতত যা আছে তা তারা ফেলে দিয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে আবারো দেখা দিতে পারে। তারা এ কারণে অপারেশন করতে নিষেধ করেছিল।
ডাক্তার: আবারো আপনার স্ত্রীর মাথায় সেই ক্যান্সার টা দেখা দিচ্ছে। এখন অনেক ছোট। সে যদি বেঁচে থাকে ভবিষ্যতে তার প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে। সামনের সিজারটাও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। কেমন আছে এই সময় আপনার স্ত্রী মারা যেতে পারে। আর আপনার স্ত্রীর মারা যাওয়ার সম্ভাবনাই ৭০%। বাদ বাকিটা আল্লাহর হাতে। আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকুন। তাছাড়া তার শরীরের condition ভালো না। ব্রেন্ডের প্রভাব আপনার বাচ্চার উপর ও পরতে পারে।
হুজাইফা: এখন কি করতে পারি?
ডাক্তার: আমি এখন ঔষুধ দিয়ে দিচ্ছি।
হুজাইফা ঔষুধ নিয়ে বাড়িতে আসছে। বারবার তার অন্তরাত্মা কেপে উঠছে অজানা এক ভয়ে।
এক বুক কষ্ট নিয়ে তৌফাইল রাত এগারোটার সময় পুকুরপাড় দিয়ে বাড়িতে আসছিল। জোসনা রাতে। আমতুল্লা আর আব্দুল্লার ওর পুকুর পাড়ে বসে আছে। তোফাইল তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল।
আব্দুল্লাহ: নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন দুনিয়ার মধ্যে সবথেকে শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো নেককার স্ত্রী। সত্যিই। তিনি সত্যিই বলেছেন। নেককার স্ত্রীই দুনিয়ার সব থেকে বড় সম্পদ।
আমাতুল্লহ: আমার জীবনের সফলতা যে আমি একজন নেককার স্বামী পেয়েছি। আমি নিজেকে পবিত্র করতে পেরেছিলাম বলেই আজ আল্লাহ আমাকে পবিত্র স্বামী দিয়েছে।
তোফাইল ভাবছে ওরা দুজন কত খুশি। অথচ আজ আমি দুই বছর যাবত বিয়ে করছি। কোনদিনও সে আমাকে বলেনি আমি তোমাকে পেয়ে ভাগ্যবান। ও রাগ হয়ে বাবার বাড়ি চলে গেছে ছয় মাস। এখন পর্যন্ত একটা ফোন দেয়নি। হায়রে ভাগ্য। হায় আফসার যদি তখন আমাতুল্লাহকেই বিয়ে করে নিতাম।
আমাতুল্লাহ: যারা দ্বীনদার হয়েও বেদিন স্বামীর কবলে পড়েছে তারা জানে দ্বীনদার স্বামীর অভাব কতটা তীব্র।
আব্দুল্লাহ: হুম। আল্লাহ আমি না চাইতেই আমাকে এত সুন্দর একজন স্ত্রী দিয়ে দিল।
আমাতুল্লাহ: আমি অনেক দোয়া করতাম একজন দ্বীনদার জীবনসঙ্গীর জন্য।
হুমায়রা: এবার আমার কেন জানি বারবার মনে হচ্ছে আমি আর বাঁচবো না।
হুমাযা: এ কথা বলিস না
পৃথিবীতে কেউই চিরদিন থাকবে না। হায়াত শেষ হলে চলে যেতেই হবে।
হুমায়রা হুমাযার দুই হাত ধরে বলল জানিনা রে কি হয়। যদি আমার কিছু হয়ে যায় আমাকে মাফ করে দিস। বাড়ির সবাইকে দেখে রাখিস। পরিবারটাকে গুছিয়ে নিস।
হুমাযা: তোর কিচ্ছু হবে না ইনশাল্লাহ।
হুমায়রা: আমার সাথে কিন্তু এমন করা ঠিক হচ্ছে না।
হুজাইফা: কেমন করা?
হুমায়রা:আমাকে অবহেলা করা।আমি আপনার স্ত্রী আপনি আমাকে এভাবে এড়িয়ে চলতে পারেন না।
হুজাইফা আহত চোখে হুমায়রার দিকে তাকিয়ে বলল তুমি তো কিছুদিন পরে চলেই যাবে। তাই আগে থেকেই একা থাকার অভ্যাস করছি।
হুমায়রা পিছন থেকে হুজাইফাকে জড়িয়ে ধরে বলল please আমাকে এভাবে কষ্ট দিবেন না। আল্লাহর দোহাই। আমি আপনার অবহেলা সহ্য করতে পারছি না।
আমিও তো তোমাকে সহ্য করতে পারি না।
হুজাইফার এমন কথায় হুমায়রা হুজাইফা কে ছেড়ে দূরে সরে দাঁড়ালো।
হু জাইফা হুমায়রার দিকে তাকিয়ে বলল কেমন করে তোমার সহ্য করি যখনই তোমার দিকে তাকাই তখনই বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠে। অসহ্য ব্যথা অনুভব করি। মনে হয় এই বুঝি তুমি চলে গেলে।
হুমায়রা: বিশ্বাস রাখেন আল্লাহ তাআলা উত্তম পরিকল্পনা করি।
হুজাইফা: হুম।
حسبنا الله ونعم الوكيل نعم المولى ونعم النصير٥
উচ্চারণ: হাসবুনাল্লাহু নি’মাল ওয়াকিল, নিমাল মওলা ওয়া নিমান নাসির।
অর্থ, আল্লাহ তায়ালাই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনিই হলেন উত্তম কর্ম বিধায়ক আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন উত্তম অভিভাবক উত্তম সাহায্যকারী।
সাবিতার দোনো বোনকে দাওয়াত দিয়েছে। কারণ সম্ভাবনা আছে খুব তাড়াতাড়ি তাকে জেলে নিয়ে যাওয়া হবে। সাবিত তার কেসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লোকমান আর আব্দুল্লাহ সাথে আলাপ আলোচনা করছে।
লোকমান: জানিনা এবার কি পরিকল্পনা করেছে আমার রব ।ঐবার তো অনেক কষ্ট করে আল্লাহর রহমায় তুমি ছাড়া পেয়েছিলে। এবার কি হয় তিনিই ভাল জানেন। ভয় হচ্ছে।এবার তো কেছো বেশি।
আব্দুল্লাহ: আল্লাহ ভরসা।
ইকরিমা সাহেব: ইয়া আল্লাহ !তুমি আমার ছেলেটাকে রক্ষা কর।
মিলখানা অতিরিক্ত টেনশনের কারণে অসুস্থ হয়ে গেছে। রান্নায় ঠিকমত মন দিতে পারছে না। হান্না বেগম সবার জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে আসলেন। হান্না বেগমকে দেখে লোকমান পার্টি থেকে উঠে হান্না বেগমের কাছে গিয়ে দেন মা ট্রেটা আমার কাছে দেন বলে ট্রে টা নিয়ে সবাইকে কফি দিল।
পরের দিন দুপুর ৩ টায়। টং টং কলিনবাজার শব্দ শুনে মিলহানা বোরখা পরে দরজা খুলতে আসলো। ও দরজার ফাঁকা দিয়ে দেখার চেষ্টা করল কে? আবছা আবছা কয়েকজন পুলিশ কে দেখতে পেল। তারা লাঠি হাতে করে দাঁড়িয়ে আছে। পুলিশ পুনরায় কলিং বেল বাঝালো। মিলহানা দরজা খুলছে না। ওর পুরো শরীর কাঁপছে। গলা শুখিয়ে আসছে। কলিংবেলের শব্দ শুনে সবাই জেগে উঠলো। সাবিত ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে গেল তারপর বাইরে বের হয়ে তিনবার কব্জি পর্যন্ত হাত ধুয়ে,তিনবার মুখে পানি ঝাপটা মেরে,অজু করে দরজার কাছে এলো ।এতক্ষণে সবাই সেখানে হাজির হয়ে গেছে। সাবিত উঁকি মেরে বাইরের পরিবেশ দেখলো। সব মহিলারাই কাঁদছে। ইকরিমা সাহেব ঠোঁটে ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছেন। সাবিত অনুমান করে নিল তার মুক্ত জীবনের সময় শেষ। ও কান্নার ওতো হান্না বেগমকে জড়িয়ে ধরলে বলল কেঁদো না মা। আমাকে ক্ষমা করে দিও। যতদিন বেঁচে ছিলাম তোমাদের হক পূরণ করতে পারিনি। আমার প্রতি কোনো দাবি রেখো না। সব সময় আমার জন্য দোয়া করবে। তারপর মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে বাবার কাছে গেল। ইকরিমা সাহেবো কান্না করে দিয়েছেন। সাবিত একটিবার সাহেবকেও জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিয়ে বলল বাবা কোনদিন কোন অভাব বুঝতে দাওনি আমায়। সব সময় আমাদের প্রতি নিজের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করে গেছো। কিন্তু আমি তোমার ব্যর্থ সন্তান ।আমি তোমাদের প্রতি আমার কর্তব্য পালন করতে অক্ষম। আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবা। ধৈর্য ধারণ কর। আল্লাহ ধৈর্য ধারণকারীদের সাথে আছেন। তারপর বাবার কপালে চুমু খেয়ে নুসাইবার কাছে এলো। নুসাইবাকে জড়িয়ে ধরে বলল আমার জন্য দোয়া করিস বোন। বড় ভাই হিসাবে তোর জন্য কিছুই করতে পারলাম না। আমাকে ক্ষমা করিস। নুসাইবা হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। সাবিত আমাতুল্লাকেউ জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিল। তারপর দুই ভায়রা ভাইকে শেষবারের মতো আলিঙ্গন করে নিলো। এদিকে পুলিশ বারবার কলিং বেল বাজিয়েই চলেছে। আমাতুল্লাহ সাবিতের ঘরে গিয়ে সাবিতের জন্য পাঞ্জাবি নিয়ে আসলো। সাবিত মিলহানার সামনে দাঁড়াতেই মিলহানা সাবিতের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠলো। সাবিতের চোখ দিয়েও অনবরত পানি ঝরছে। সাবিত মিলহানার কপালে কিস করে দুই বাহু ধরে মিলহানাকে বুক থেকে উঠিয়ে বলল ধৈর্য ধারণ কর। আল্লাহর উপর ভরসা রাখো তিনি উত্তম করেন। নিজের যত্ন নিও। আমার মিকদাদের যত্ন নিও। আমার অনাগত সন্তানের যত্ন নিও। তাদের অবহেলা করো না। আমি তোমার কাছে আল্লাহর উপর ভরসা করে তাদের রেখে যাচ্ছি। তাদের দ্বীনি এলিম শিক্ষা দিও। ধৈর্য ধারণ কর। মিকদাদ এতক্ষণ ঘুমানো ছিল। বাবার সাথেই সে ঘুমিয়ে ছিল। সাবিত দরজা খুলতে যাবে এমন সময় মিকদাতদ এশে ঘুম ঘুম চোখে সাবিতের পাঞ্জাবি ধরল। সাবিত অসহায় দৃষ্টিতে মিকদাদর দিকে তাকালো।
মিকদাদ: আব্বু আমাকে নিয়ে যাও। আমিও তোমার সাথে যাব। আমি আজকে স্বপ্ন দেখেছি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এখন থেকে তোমাকে আর একা কোথাও যেতে দেব না।
সাবিত বসে মিকদাদের কপালে চুমু দিয়ে বলল পরে তোমাকে এসে নিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ বাবা। এখন আমি যাই বলেই সাবিত উঠে দরজা খুললো কিন্তু মিকদাদ শক্ত করে সাবিতের পাঞ্জাবি ধরে আছে। মিমলহানা মিকদাদকে কোনরকম ছাড়িয়ে দিলে। সাবিত তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে গেল।মিকদাদ বাবা বাবা বলে চিৎকার করছে। পুলিশ সাবিতের হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সবাই সাবিতের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। মিকদাদ মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে সিঁড়ির দিকে দৌড় দিল। মিদ্দাদের পিছু পিছু লোকমান আব্দুল্লাহ ও দৌড় দিল। ওরা ওই তলায় বসেই মিকদাদকে ধরে আবার বাসায় নিয়ে এলো। ঐদিন মিকদাদ ৩০ মিনিট তার বাবার জন্য চিৎকার করেছিল। কিন্তু সাবিত আর ফিরে নেই। আহমদ সাহেবের কাছে জানালে বাড়ির সবাই সাবিতদের বাড়িতে আসলো। ফাতেমা বেগম,হুমাযা,হুমায়রা মিলহানাকে সান্তনা দিচ্ছে। তারা মিলহানাকে নিয়ে বাড়িতে ফিরল। মিলহানা কয়েকদিনে বাবার বাড়িতে বেড়াবে তারপর মন ভালো হলে ওই বাড়ি যাবে ইনশাআল্লাহ।
#এসো রবের কাছাকাছি
২৫.
কয়েক দিন পর।
মিলহানা হুমায়রা দুই বোন বারান্দায় বসে আছে। বিভিন্ন কথা বলছে দুই বোন। তারমধ্যে দ্বীনি আলোচনাই বেশি।
মিলহানা: শুনলাম আপনি নাকি অনেক তাড়াতাড়ি আমাদের ছেড়ে চলে যাবি।
হুমায়রা: জানিনা রে। যেতেও তো পারি।
মিলহানা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। হুম।যান সবাই আমাকে ছেড়ে চলে যান।
হুমায়রা: আল্লাহ চাইলেই তো থেকে যাব ইনশাআল্লাহ।
মিলহানা মুচকি হাঁসলো । আল্লাহ ভরসা।
হুমায়রা: এবার কি হাসপাতালে ডেলিভারি করবো না তুমি করবে।
মিলহানা: আমার অবস্থা তো দেখতেই পারছেন। যদি আল্লাহ তায়ালার সমর্থ্য দেয় তাইলে করবো। নয়তো হাসপাতালেই যেতে হবে।
হুমায়রা: হুম। হাসপাতালের ডেলিভারি করতে ভয় হয়। হাসপাতালের ডাক্তার তো শুধু চিনে সিজার।
মিলহানা: হুম।
হুমায়রা:নিজের একটু যত্ন নাও বোন। নিজের প্রতি এভাবে অবহেলা করো না। নিজের প্রতি অবহেলা করে বাচ্চাটাকে কষ্ট দিচ্ছ। আল্লাহকে ভয় কর। তোমার গুনাহ হচ্ছে।
মিলহানা আবারও দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে বলল ইয়া আল্লাহ।
মিলহানা: জানেন আপু অনেক miss করি খিলাফত কে। আজ যদি এই পৃথিবীতে,বাংলাদেশে খেলাফত কায়েম থাকতো তাহলে হয়তো আজ এভাবে সাবিত কারাগারে থাকতো না।
হুমায়রা: হুম। মনে আছে গানটা এক কালে মায় রুটি রুজি হায় আর এক কালিমায় ফাঁসি।
মিলহানা: কি করে ভুলি বলেন। ছোটবেলায় বুঝতাম না গানটার অর্থ আর আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
আরো কিছুক্ষণ গল্প করে দুজন যার যার রুমে গেল। আসরের আযান দিচ্ছে। মিলহানা আসরের নামাজ পড়ে অভ্যাস মত আসরের পরের নির্দিষ্ট দোয়া গুলো পড়ল। বিছানায় উঠে গুটি শুঁটি কানে একটা ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনতে বসলো ও এক এক করে শুনছে আর গাইছে
“এক কাল মায়ে রুটি রুজি আর এক কালিমায়ে ফাঁসি।”
“কোন একদিন এদেশের মাটিতে কালিমার পতাকা উঠবে।সেদিন সবাই খোদাই বিধান পেয়ে দুঃখ বেদনা ভুলবে।”
“আজ নয় কাল আসবে রে সেদিন। আজ নয় কাল আসবে রে সেদিন। উড়বে পতাকা, উরবে কালিমা। আজ নয় কাল আসবেরে সে দিন।”
“জালিমের বন্দিশালায় বন্দি কেন আমার নেতা। কারার ঐ লৌহ কপাট ভাঙবে এবার বীর জনতা।”
“জালিমের জিন্দানখানা আগুন দিয়ে দাও জ্বালিয়ে যেখানে নবীর অরিস আলিমদেরকে বন্দী করে।”
“ভাং ভেঙ্গে ফেল কাটা তার লৌহ কপাট। তাগুদের মসনদ করবে লোপাট। কাফেরের ঘাড়ে কর সজরে আঘাত। ঘুমিয়ে থাকা আর যাবে না।”
গানগুলো শুনতে শুনতে কখন যে চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু করেছে তা ও টেরই পাইনি। মাঝে মাঝে গানের সুরে সুরে তালে তালে আল্লাহু আকবার বলে উঠছে। একাকীত্ব সময় প্রায় এই গানগুলো শুনে ও। গানগুলো শোনা এখন একপ্রকার নেশার মতো হয়ে গেছে। দিনে একবার করে না শুনলে ভালো লাগেনা।
মিলহানা নয় মাসে একজন পুত্র সন্তান জন্ম দিয়েছে। তার পুত্রের বয়স এখন এক মাস।
দেখতে দেখতে ঘনিয়ে আসল হুমায়রার ডেলিভারির time. কালকে হুমায়রা ডেলিভারি হবে। কালকে সকাল দশটায় হাসপাতালে যেতে হবে। হুমায়রা কাপড়চোপড় গোজাচ্ছে। আর তার চারপাশে বসে আছে তার সব নন মহারামরা। সবথেকে দূরে বসে আছে হুজাইফা। মোহাম্মদ মাদ্রাসায়। সে হাফিজ শেষ করেছে। সে এখন একজন হাফেজ। আজ রাতে তাকে পাগড়ী দেওয়া হবে। হুজাইফার যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু হুজাইফা যায়নি। এই কারণে অবশ্য মহাম্মদ অনেক রাগ হয়েছে বাবা মায়ের উপর। তা হুমায়রা হুজাইফা ভালো করেই বোঝে।
হুমায়রা রেহানাকে নিজের রুমে ডেকে এনে কি যেন দেখালো। রায়হানাও মাথা নারীয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিল। তা বারান্দা থেকে লক্ষ্য করল হুজাইফা।
হুমায়রা: মনটা কেমন কেমন জানি করছে ।মোহাম্মদকে অনেক দেখছি ইচ্ছা করছে। ওগো মহাম্মদের কাছে একটু ফোন দেন না।
হুজাইফা: ফোন কি ধরবে। আজকে ওয়াজ। বোঝোই তো হুজুররা তো অনেক ব্যস্ত।
হুমায়রা: কেমন জানি বারবার মনে হচ্ছে মুহাম্মদের সাথে আর কোনদিন কথা হবে না ।
হুজাইফা: আল্লাহর উপর ভরসা রাখ। আবারও আমরা একসাথে থাকব ইনশাআল্লাহ বলতে গিয়ে হুজাইফা হাউমাউ করে কেঁদে দিল।
হুমায়রা হুজাইফার কে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিল।
হুজাইফা: হুমায়রা আমার অনেক ভয় করছে। বিশ্বাস করো আমার অনেক ভয় করছে। সম্ভব হলে কালকে তোমাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতাম না।
হুমায়রা মনে মনে আপনাকে কি করে বলি আমারও যে অনেক ভয় করছে বলে মুখে বলল আল্লাহ যেটা চাইবেন সেটাই হবে। শুনুন আমি যদি মরেও যাই তবুও আপনি আমাকে ভুলে যেয়েন না কিন্তু।
হুজাইফা আরো কেঁদে উঠলো।
এই যে কাঁদলে কিন্তু কথা বলবো না বলে হুমায়রা নিশ্চুপ হয়ে বসে রইল। হুজাইফা চোখের পানি মুছে বলল আর কাঁদবো না বল। শুনেন আমি যদি মারা যাই আমার কবর মাঝে মাঝে জিয়ারত করতে যাইয়েন। অনেক সুন্দর একটা পরীর মত মেয়ে দেখে বিয়ে করে নিয়েন। তখন আমি তো আর দেখবো না আর জ্বলবোও না আমারও সমস্যা হবেনা আপনিও সুখে থাকবেন। আর হ্যাঁ একজন অসহায় নারীকে বিয়ে করেন। যে আপনার আশ্রয় আশ্রিত হবে। তার কাছে মাঝে মাঝে আমার কথা বইলেন। আমার সন্তানদের বেশি বেশি করে যত্ন নিবেন। উফফো আমার কিন্তু আর ভালো লাগছে না কান্না বন্ধ করেন। এভাবে কান্না করলে লোকে কি বলবে। কত বড় একটা ডংকা ছেলে কেমনে কান্দে। আস্ত একটা পোলাপাইন। হুজাইফা মুচকি হাঁসলো। আমি মারা গেলে বুঝি এভাবে কাঁদেন। আমার কিন্তু কষ্ট হবে। বাড়ির কেউ কি কাঁদতে দেবে না সবাইকে সান্ত্বনা দিবেন আপনি। আপনার কে strong থাকতে হবে। মনে রাখবেন আপনার পুরুষত্ব আছে। নিজের পুরুষত্ব কে ভুলে যেয়েন না। আমি যদি মারাই যাই bookself এর ভেতর একটা ব্যাগে কতগুলা বই আছে। ওই বইগুলো বাড়ির প্রত্যেক সদস্যকে একটি করে দিবেন। আর আপনারটা নির্দিষ্ট করে রাখা আছে। আপনি দেখলেই চিনবেন।
হুজাইফা কান্না ভেজা কন্ঠে বলল তুমি চুপ থাকো এসব কিছুই হবে না দেখো তুমি আবার ফিরে আসবে।
হুমায়রা: জানিনা কি হবে ?আমি কি আপনার কাছে ফিরে আসতে পারবো নাকি রবের কাছাকাছি চলে যাব। যদি চলেই যাই তাহলে প্রত্যেকদিন,প্রত্যেক তাহাজ্জুতে আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন রবের কাছাকাছি যেতে পারি। ঐদিন রাত ১১ঃ০০ টার সময় হুমায়রা ঘুমাতে আসলো। এর আগে কোনদিনও রাত ১১টা পর্যন্ত রাত জাগেনি। ঐদিনই হুজাইফার সাথে গল্প করতে করতে ১১ টা বেজে যায়। হুমায়রা ঘুমেবেবর কিন্তু হুজাইফা চোখে ঘুম নেই। সে একধ্যানে হুমায়রার দিকে তাকিয়ে আছে। রাত একটা হুজাইফা উঠে তাহাজ্জুদে দাঁড়ালো। প্রত্যেকটা সেজদায় চোখের পানি ঝরে পড়ছে। সেজদা দিলেই মন চাচ্ছে হাউমাউ করে কাঁদতে। দীর্ঘক্ষণ ধরে দুই রাকাত নামাজ পড়ল। তারপর রাত তিনটায় মোনাজাত ধরল ইয়া রাব্বুল আলামিন জীবনের যা কিছু চাইছি। তাই তুমি দিয়েছো। আমার কোন কিছুতে অপূর্ণ রাখোনি তুমি। ইয়া রহমান কয়েক বছর আগে তোমার কাছে হুমায়রা কে চেয়েছিলাম তুমি হুমায়রা কে আমার জীবনে এনে দিয়েছিলে। কাল সে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়বে। ডাক্তার বলেছে তার না বাচার আশঙ্কা ৭০%। সে সম্পর্কে তো তুমি অবগত আছোই। ইয়া রব্বুল আলামিন তুমি জানো আমি তোমার পরে তোমার রাসূলের পরে আমার বুকে হুমায়রাকে স্থান দিয়েছি। আমরা তোমার জন্যই দুজন দুজনকে ভালোবেসেছি। ইয়া রব্বুল আলামিন আমি আমার জীবনের সকল স্বপ্ন তাকে নিয়ে সাজিয়েছি। তাকে ছাড়া আমার চলার পথ অচল মনে হয়। তাকে ছাড়লে আমি অন্ধকার দেখি। তুমি দয়া করে তাকে আমার জীবন থেকে কেড়ে নিও না। তুমি তাকে সুস্থ হিসেবে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা প্রদান কর। ইয়া রব্বুল আলামিন তুমি তো আল মালিক। তুমি চাইলে সব পারো। পৃথিবীর কোন কিছুই তোমার অদৃষ্টে নেই। তুমি হুমায়রা কে রহম করে বাঁচিয়ে রাখো। তাকে নিয়ে আমার আরো এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দাও। হুজাইফার কান্নার শব্দ হুমায়রার ঘুম ভেঙে গেল। ওম অজু করে এসে হুজাইফার পিছনে দাঁড়ালো। হুজাইফা একধানে মোনাজাত করেই যাচ্ছে। ও দুই রাকাত নামাজ পড়ে মোনাজাত ধরল ইয়া রব্বুল আলামিন আমি জানিনা আপনি আমার হায়াতে কি লিখেছেন আমি আপনার কাছে কিছুই চাই না ।শুধু একটা জিনিস চাই আপনার ভালোবাসা। আপনি ভালোবাসা দিয়ে আমার গুনাগুলো ক্ষমা করেন। ইয়া রব্বুল আলামিন আমাকে কবরের আযাব থেকে বাঁচান।
আমাকে মৃত্যুর যন্ত্রণা থেকে বাঁচান।
আমাকে কেয়ামত দিবসের কঠরতা থেকে বাঁচান।
আমাকে পুলসিরাতের আগুন থেকে বাঁচান।
আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচান। হুমায়রা আজ আর সূর্য ওঠার সাথে সাথে ইসরাকের নামাজ পড়ে যায় নামাজ ছাড়লো না। হুজাইফা হুমায়রা এখনো কেউই জায়নামাজ ছাড়েনি। হুমায়রা দুনিয়া বিষয়ে কোন দোয়া আছে আর করছে না শুধু দোয়া করছে আখিরাতের জন্য। আখিরাতে নিজের মুক্তির জন্য। অন্যদিকে হুজাইফা ব্যাকুল হয়ে বারবার আল্লাহর দরবারে হুমায়রা কেই চেয়ে যাচ্ছে। সবাই হুমায়রা দরজার সামনে বসে আছে কখন হুমায়রা বের হবে আর হুমায়রা কে দেখবে। মিলহানা ও বসে আছে হুমায়রা কে দেখার অপেক্ষায়। হুজাইফাও আজকে সকালে মসজিদে যায়নি। ঘরে বসে হুমায়রার সাথেই সালাত আদায় করেছে। সকাল 8:00 হুমায়রা দরজা খুলে সবাইকে সালাম দিল । ফাতেমা বেগম সালামের উত্তর দিয়ে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল। হুজাইফা বাইরে বের হল। ওর চেহারা একদম বিমর্ষ লাগছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ছেলেটা আজকে রাতে একফোঁটাও ঘুমায়নি।
হুজাইফা: উম্মে সব কিছু রেডি করেছেন? আমরা এক ঘন্টা পরেই রওনা দেব ইনশাআল্লাহ।
ফাতেমা বেগম কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বলল হ্যাঁ হুজাইফা সবকিছু রেডি। এখন শুধু আমরা খেয়ে রওনা দেব। মিলহানা বাদে সবাই হাসপাতলে যাওয়ার জন্য রওনা হচ্ছে। মিলহানা এবং হান্না বেগমী বাড়িতে থাকবেন। মিলহানা অসুস্থ থাকায় যেতে পারছে না। নয়তো সেও যেত।
হুমায়রা মিলহানা আর হান্না বেগমের কাছে থেকে বিদায় নিয়ে নিছে আসলো। হুজাইফা মাদ্রাসার সব ছাত্রদের কাছে আগে থেকেই দোয়া চেয়ে রেখেছিল। সবাই একে একে গিয়ে গাড়িতে উঠছে।
হুমায়রা: চলুন না উম্মের কবর টা একটু জিয়ারথ করে আসি।
হুজাইফা: হুম চলো। জোরে সুর দিয়ে বলল আপনারা সবাই গিয়ে গাড়িতে বসুন। আমরা একটু মায়ের কবরটা জিয়ারত করে আসি। সবাই গিয়ে গাড়িতে বসলো। হুমায়রা হুজাইফা কবরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কবর জিয়ারত শেষে চলে যাবার আগে হুমায়রা বলল উম্মে আপনি তো রবের কাছাকাছি চলে গেছেন। ভাগ্যে থাকলে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের দেখা হবে। আমিও চলে আসছি রবের কাছাকাছি। তারপর দুজন মিলে গাড়িতে উঠলো। গাড়ির মাঝখানের সিটে হুমায়রা বসা। এই পাশে ফাতেমা বেগম আর অপর পাশে হুজাইফা।
গাড়ি হাসপাতালের সামনে এসে থামল। কিছুক্ষণ পর। ডাক্তার ওটির রুমে নিয়ে হুমায়রা কে বসিয়ে রেখেছে। হুমায়রার pain উঠলে অপারেশন শুরু করা হবে। হুজাইফা হুমায়রার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নামাজের রুমে গেল। আর বাদবাকি সবাই হুমায়রা কি ঘিরে বসে আছে। প্রায় ৩০ মিনিট পর হুমায়রার pain উঠল। মহিলা ডাক্তার অপারেশন শুরু করল। কঠোর নিরাপত্তা আছে কোনভাবেই কোনো পুরুষ ডাক্তার ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ওটি থেকে হুমায়রার চিৎকার ভেসে আসছে। হুমায়রা চিৎকার বন্ধ হয়ে বাবুর চিৎকার শুরু হয়েছে। ওটির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সবাই দয়ায়নুস পরছে। ইয়াহিয়া জন্য রক্ত আনতে গিয়েছিল। রক্ত নিয়ে মাত্র হাসপাতালে ফিরল। ডাক্তার আগে থেকেই রক্ত জোগাড় করতে বলেছিল। ওরা তাই করেছে। ইয়াহিয়া ওটির দরজা টোকা দিয়ে বলল সিস্টার রক্তে এনেছি। কিন্তু কেউর কোনো সারা শব্দ এলোনা। ৫ মিনিট পর একজন নার্স মোলিন মুখে বের হল।
আহমদ সাহেব: হুমায়রা কেমন আছে ডাক্তার? ওর কি অবস্থা?
নার্স: তার একটা মেয়ে হয়েছে। মেয়েকে অক্সিজেন দেওয়া লাগবে তাড়াতাড়ি টাকা জোগাড় করেন।
মাহাদী সাহেব: সব হবে। আগে বলেন হুমায়রা কেমন আছে?
নার্স মাথা নিচু করে বলল I am sorry. She is dead.
ফাতেমা বেগম খাডা থেকে মাটিতে বসে পড়লেন। হুমাযা দুই হাত দিয়ে তার মুখ টিপে কান্নার শব্দ আটকানোর বৃথা চেষ্টা করছে। মাহাদী সাহেব জাগায় দাঁড়িয়েই কেঁদে দিলেন। চোখের পানিতে আহমদ সাহেবের দাড়ি ভিজে যাচ্ছে। ইয়াহিয়া চোখ বন্ধ কপাল কুঁচকে বসে আছে। সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কোন মানুষ নেই। কে কাকে সান্তনা দেবে সবাই ব্যথিত।
চলবে ইনশাআল্লাহ
মাবিয়া আক্তার মুকুল ইসলামি গবেষক প্রথম বুলেটিন
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ্
Leave a Reply