সমালোচনার মুখে পদ ছাড়লেন আইডিয়াল অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী

মো: আলমগীর হোসেন বিশেষ প্রতিনিধি তারাকান্দা ময়মনসিংহ।

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:৩০ এএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৩
প্রথম বুলেটিন
দাতা সদস্যের সঙ্গে ছাত্রীর বিয়ের ঘটনায় সমালোচনা ও মামলা কাঁধে নিয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদ ছাড়লেন ফাওজিয়া রাশেদী। যদিও তিনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। গভর্নিং বডির সভায় তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়।
সোমবার (৯ অক্টোবর) সকালে গভর্নিং বডির সভাপতি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রথম বুলেটিন
আরও পড়ুন:প্রথম বুলেটিন
তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, উনি নিজেই সরে গেছেন। তাকে কিন্তু অপসারণ করা হয়নি। তিনি স্বেচ্ছায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগপত্রটি গভর্নিং বডির সভায় উপস্থাপনের পর সবার সম্মতিতে তা গৃহীত হয়। এখন থেকে তিনি (ফাওজিয়া রাশেদী) আর প্রতিষ্ঠানের কেউ না।’
প্রথম বুলেটিন
জানা গেছে, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করেন প্রতিষ্ঠানটির দাতা সদস্য মুশতাক আহমেদ। ঘটনা জানাজানি হয় জুনের শুরুতে। এ ঘটনায় ১ আগস্ট মুশতাকের বিরুদ্ধে প্রলোভন ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ছাত্রীর বাবা। মামলায় সহযোগিতার অভিযোগ এনে অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকেও আসামি করা হয়।
৮ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়। গভর্নিং বডির সদস্য পদ থেকে সরে যান মুশতাক। এরপর ২০ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে দুই মাসের ছুটিতে যান অধ্যক্ষ ফাওজিয়া। ওই সময়ই তিনি পদত্যাগপত্র দেন বলে জানিয়েছেন গভর্নিং বডির দুজন সদস্য।
প্রথম বুলেটিন
আরও পড়ুন: প্রথম বুলেটিন
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে গভর্নিং বডির একজন সদস্য জাগো নিউজকে বলেন, ‘মুশতাক আহমেদের সঙ্গে অধ্যক্ষের সুসম্পর্ক ছিল। ছাত্রীর সঙ্গে প্রেম ও বিয়ের ঘটনায় অধ্যক্ষের যোগসাজশ রয়েছে—এমন অভিযোগ ওঠায় ফাওজিয়া রাশেদী চাপে ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনার পর যতগুলো মিটিং হয়েছে, সেখানে তার (ফাওজিয়া রাশেদী) জন্য প্রতিষ্ঠানের ইমেজ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে অনেক সদস্য মতামত দেন। এ কারণে তিনি স্বেচ্ছায় পদ থেকে সরে যেতে পারেন।’
আরও পড়ুন: প্রথম বুলেটিন
সমালোচনা বা কোনো চাপে নয়, একান্ত ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন বলে দাবি করেন ফাওজিয়া রাশেদী। সোমবার সকালে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘মানুষের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত থাকতে পারে না? এখানে কোনো চাপ বা সমালোচনার জন্য আমি দায়িত্ব ছাড়িনি। একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করেছি। কেউ আমাকে জোর করে সরাননি, কেউ বলেনওনি।’
প্রথম বুলেটিন
স্কুলে দুধ বিতরণের পাইলট কর্মসূচিতে ইতিবাচক ফল

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে দৈনিক মাথাপিছু দুধ পানের পরিমাণ গড়ে এক লিটারের কাছাকাছি হলেও বাংলাদেশে তা মাত্র ১৭৬ মিলিলিটার। এ পরিস্থিতিতে শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে দুধের গুরুত্ব বিবেচনায় বিনামূল্যে দুধ বিতরণ করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের (এলডিডিপি) আওতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে দুগ্ধজাত পণ্য। প্রাথমিকভাবে সারাদেশের নির্বাচিত ৩০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পান করানো হচ্ছে তরল দুধ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ওই স্কুলগুলোতে দুধ বিতরণ করা হচ্ছে। এতে বেড়েছে স্কুলে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার।
প্রথম বুলেটিন
দুধ উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং বাজারজাতকরণে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এলডিডিপি প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য দুধের বাজারজাতকরণ এবং দুধ পানের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো। কেন্দ্রীয় স্কুল মিল্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির মাধ্যমে দেশের ‘দারিদ্র্য মানচিত্র’ অনুযায়ী ৩০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেওয়া হচ্ছে এ কার্যক্রম। দেশের দরিদ্র এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ সুবিধা ভোগ করছে। যেসব এলাকায় মারাত্মকভাবে পুষ্টিহীনতায় ভোগা, খর্বকায় ও ক্ষীণ বৃদ্ধিসম্পন্ন শিশু বেশি রয়েছে, স্কুল নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে সেগুলো।
চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচি উদ্বোধনের পর থেকে এখন পর্যন্ত ধাপে ধাপে ২৮৪টি স্কুলে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। স্কুলগুলোতে ২০০ মিলিগ্রামের প্যাকেটে ইউএইচটি অথবা পাস্তুরিত দুধ বছরের ১৬০ দিন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি প্যাকেটে ‘স্কুলের জন্য দুধ, বিক্রির জন্য নয়’, এলডিডিপি, ডিএলএস- লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজার ৭৭৫ জন শিক্ষার্থী বিনামূল্য এ দুধ পান করার সুযোগ পাচ্ছে। এরমধ্যে ৩৪ হাজার ৫৭০ জন ছাত্রী ও ৩১ হাজার ২০৫ জন ছাত্র।
প্রথম বুলেটিন

সবার জন্য নিরাপদ ও মানসম্মত প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। বর্তমান সরকার চায় আগামী প্রজন্ম মেধাবী হিসেবে গড়ে উঠুক। তাই স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পুষ্টি চাহিদা পূরণে পুষ্টিসমৃদ্ধ ও আদর্শ খাবার হিসেবে দুধ বিতরণ কর্মসূচি চলমান। স্কুল মিল্ক ফিডিং নামের এ কর্মসূচির মাধ্যমে দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণের অভ্যাস সৃষ্টি হবে। এ কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাইলট আকারে চালু হয়েছে।

প্রথম বুলেটিন
আরও পড়ুন>> প্রথম বুলেটিন
প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (পিএমইউ) কর্তৃক নির্বাচিত দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ, আড়ং ডেইরি, ফার্ম ফ্রেশ, আরডি মিল্ক ও মিল্ক ভিটা। এরমধ্যে প্রাণ ডেইরি ৭৪টি স্কুলে, মিল্কভিটা দুটি স্কুলে, ফার্ম ফ্রেশ ৭১টি স্কুলে, আড়ং ডেইরি ৭৮টি স্কুলে ও আরডি মিল্ক ৭৫টি স্কুলে দুধ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আন্তঃমন্ত্রণালয় স্কুল মিল্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটি কাজ করছে। স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়নের সার্বিক অগ্রগতি সভায় পর্যালোচনা করে এ কমিটি। কর্মসূচি বাস্তবায়নে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, তিন মাসে একবার সভা আহ্বান এবং জরুরি প্রয়োজনে যে কোনো সময়ে সভা আহ্বান করতে পারে কমিটি। পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে কর্মসূচি পরিচালনার স্বার্থে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-বিশেষজ্ঞকে সংযুক্ত করতে পারে। এছাড়া স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি দুধের সরবরাহ নিয়মিত আছে কি না বা সরবরাহ বন্ধ আছে কি না তা পরিবীক্ষণ করছেন। গাইডলাইন অনুযায়ী দুধ বিতরণ করছে কি না তা পরিবীক্ষণ, স্কুলে দুধের প্যাকেটের অপব্যবহার বা তছরুপ হচ্ছে কি না সেটি নজরদারি করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ সম্পর্কিত অভিযোগ জিআরএম পদ্ধতি অনুযায়ী নিষ্পত্তি করছে কমিটি।

জানা গেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রধান ভূমিকা পালন করছেন। প্রধান শিক্ষক সংশ্লিষ্ট ক্লাসের শিক্ষককে দুধ বিতরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিয়োজিত করছেন। শিক্ষকদের সহায়তায় সরবরাহ করা দুধের প্যাকেট গ্রহণ এবং যথাযথভাবে বিতরণের লক্ষ্যে স্কুলের একটি নির্দিষ্ট স্থানে মজুত করে তা বিতরণ করা হয়। এক্ষেত্রে টেট্রাপ্যাকে ইউএইচটি দুধ এবং ফুড গ্রেড পলিপ্যাকে সরবরাহ করা পাস্তুরাইজড দুধ প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে (টিফিন সময়) ভ্যানে স্কুলে পৌঁছানোর পর বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন>> প্রথম বুলেটিন
কর্মসূচি বাস্তবায়নের শুরুতে স্কুলের শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা প্রস্তুত এবং তা উপজেলা পর্যায়ে স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির কাছে সরবরাহ করতে হয়। তালিকায় স্কুলের ক্লাসভিত্তিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা, নাম, পিতা-মাতা/অভিভাবকের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ থাকে।

যেসব স্কুলে শিক্ষার্থীদের দুধ পান করানো হচ্ছে সেখানে সব শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করতে একটি আইডি কার্ড দিয়েছি। স্কুলের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির সব শিক্ষার্থী প্রতিদিন দুধ পাচ্ছে। প্রতিটি স্কুলেই শিক্ষক এবং অভিভাবকদের আমরা পরিবেশ ও পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেবো। আমরা মূল্যায়ন করছি এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে প্রভাব কী হলো? শিশুদের উচ্চতা, ওজন কতটুকু বাড়লো? এছাড়া তার মেধা কতটুকু বাড়লো তা দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলোতে বছরে ১৬০ দিন চলবে এই কার্যক্রম। আমরা দেখতে পাচ্ছি স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার কিন্তু বেড়েছে, এটি ইতিবাচক।

এ প্রকল্পের আওতায় রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার খোর্দ্দ ভূতছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে স্কুল মিল্ক ফিডিংয়ের কার্যক্রম। এ স্কুলে ২০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে অনেকেই থাকতো অনুপস্থিত। তবে সে সমস্যা এখন অনেকটা কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা মোসা. সাহানা বেগম।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের স্কুলে প্রাথমিকের ২০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এখন গড়ে ১৮০ জন উপস্থিত থাকে। আগের তুলনায় উপস্থিতি অনেক বেড়েছে। আর্থিক সমস্যার কারণে আগে হয়তো এখানকার অনেক বাচ্চা দুধ সেভাবে পান করতে পারতো না। এখন তারা স্কুলে এসে আনন্দের সঙ্গে দুধ পান করছে। নিয়মিত যতটুকু পরিমাণ খাওয়া দরকার, সেটি পাচ্ছে। তারা এখন অনেক খুশি এবং আনন্দের সঙ্গে স্কুলে আসছে। পড়াশোনায় তাদের মনোযোগও বেড়েছে। আগে অনেকে ক্লান্তি বোধ করতো। খেলাধুলায় অনীহা ছিল। স্কুলে দুধ খাওয়ানো শুরুর পর স্কুল পালানোটাও অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। তারা নিয়মিত সকাল ৯টায় আসছে এবং ৪টায় যাচ্ছে। এ পাইলট প্রোগ্রাম তিন বছর চলবে।

খোর্দ্দ ভূতছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী পূজা রানী রায় জাগো নিউজকে জানায়, আমাদের প্যাকেটের দুধ দেয়, সেটাতেই আমরা খাই। আমরা প্রতিদিন এখানে দুধ পাই। ১১টায় আমাদের দুধ দেয়। দুধ খেলে পুষ্টি হয়, ক্লাসে মনোযোগ আসে, পড়াশোনা ঠিকমতো হয়।
আরও পড়ুন>> প্রথম বুলেটিন
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী বিথী আক্তার জানায়, আমি প্রতিদিন স্কুলে দুধ খাই। ভালো লাগে দুধ খেতে। আগে বাসায় মাঝে মাঝে দুধ খেতাম, এখন স্কুলে এসে প্রতিদিন দুধ খাচ্ছি।
স্কুলগুলো ঘুরে দেখে গেছে, শ্রেণিকক্ষে দুধ বিতরণ সম্পন্ন করেন শিক্ষকরা। সংশ্লিষ্ট শিক্ষক দুধের প্যাকেট কেটে এরমধ্যে একটি পাইপ ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে দেন। দুধ বিতরণের আগে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান কারা দুধ পানে আগ্রহী এবং অনাগ্রহী। অনাগ্রহী/অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের দুধ পানে জোর করা হয় না। কোনো শিক্ষার্থীর বিশেষ সমস্যা (যেমন- ল্যাকটোজেন ইনটলারেন্স) থাকলে কমিটির সদস্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার প্রত্যয়ন সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

এছাড়া আগ্রহী শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে নির্ধারিত সময়ে প্যাকেটের সম্পূর্ণ দুধ পানে উৎসাহিত করা হয়। দুধ পান সম্পন্ন হলে খালি প্যাকেট সংগ্রহ করে দুধ সরবরাহকারী ভ্যানচালকের কাছে ফেরত দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক। দুধ গ্রহণ ও বিতরণ সম্পর্কিত রেকর্ড নিয়মিতভাবে সংরক্ষণ করা হয় রেজিস্ট্ররে।
এদিকে কর্মসূচির আওতায় তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আইডি কার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী দুধ বিতরণ হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর আইডি কার্ড প্রস্তুত করে বিতরণ করেছে। সাধারণত এ সংক্রান্ত রেজিস্টার অনুসরণ করে নাম ডেকে দুধের প্যাকেট বিতরণ করতে হয়। দুধ বিতরণের পর প্রধান শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রেজিস্টারে সই করেন। এর একটি প্রতিলিপি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়। প্রতিদিন প্রাপ্ত দুধের প্যাকেটের সংখ্যা, বিতরণ করা প্যাকেটের সংখ্যা, ফেরত দেওয়া প্যাকেটের সংখ্যা এবং খালি বা ক্ষতযুক্ত প্যাকেটের সংখ্যা রেকর্ডভুক্ত করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরে তা উপজেলা স্কুল মিল্ক ফিডিং বাস্তবায়ন কমিটির কাছে পাঠানো হয়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রধান ভূমিকা পালন করছেন। প্রধান শিক্ষক সংশ্লিষ্ট ক্লাসের শিক্ষককে দুধ বিতরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিয়োজিত করছেন। শিক্ষকদের সহায়তায় সরবরাহ করা দুধের প্যাকেট গ্রহণ এবং যথাযথভাবে বিতরণের লক্ষ্যে স্কুলের একটি নির্দিষ্ট স্থানে মজুত করে তা বিতরণ করা হয়। এক্ষেত্রে টেট্রাপ্যাকে ইউএইচটি দুধ এবং ফুড গ্রেড পলিপ্যাকে সরবরাহ করা পাস্তুরাইজড দুধ প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে (টিফিন সময়) ভ্যানে স্কুলে পৌঁছানোর পর বিতরণ করা হয়।

এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) চিফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানী জাগো নিউজকে বলেন, যেসব স্কুলে শিক্ষার্থীদের দুধ পান করানো হচ্ছে সেখানে সব শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করতে একটি আইডি কার্ড দিয়েছি। স্কুলের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির সব শিক্ষার্থী প্রতিদিন দুধ পাচ্ছে। প্রতিটি স্কুলেই শিক্ষক এবং অভিভাবকদের আমরা পরিবেশ ও পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেবো। আমরা মূল্যায়ন করছি এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে প্রভাব কী হলো? শিশুদের উচ্চতা, ওজন কতটুকু বাড়লো? এছাড়া তার মেধা কতটুকু বাড়লো তা দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলোতে বছরে ১৬০ দিন চলবে এই কার্যক্রম। আমরা দেখতে পাচ্ছি স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার কিন্তু বেড়েছে, এটি অত্যন্ত ইতিবাচক।
আরও পড়ুন>> প্রথম বুলেটিন
সার্বিক বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, সবার জন্য নিরাপদ ও মানসম্মত প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। বর্তমান সরকার চায় আগামী প্রজন্ম মেধাবী হিসেবে গড়ে উঠুক। তাই স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পুষ্টি চাহিদা পূরণে পুষ্টিসমৃদ্ধ ও আদর্শ খাবার হিসেবে দুধ বিতরণ কর্মসূচি চলমান। স্কুল মিল্ক ফিডিং নামের এ কর্মসূচির মাধ্যমে দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণের অভ্যাস সৃষ্টি হবে। এ কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাইলট আকারে চালু হয়েছে।
ঢাকায় হচ্ছে আরও ২৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভিত্তিস্থাপন সোমবার
রাজধানীতে আরও ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করছে সরকার। ঢাকা মহানগর ও পূর্বাচল এলাকায় এ স্কুলগুলো করা হচ্ছে। সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে একযোগে স্কুলগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
‘ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দনকরণ’ প্রকল্পের আওতায় এ ২৭টি স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রথম বুলেটিন
রোববার (৮ অক্টোবর) বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: প্রথম বুলেটিন
তিনি জানান, রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম এলাকার ওয়াক-আপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে অনুষ্ঠান থেকে একযোগে সবগুলো স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।
প্রথম বুলেটিন
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ ও এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আলি আখতার হোসেন। সভাপতিত্ব করবেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত
‘জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প নিয়ে তরুণদের কাজ করতে হবে।
জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প নিয়ে তরুণ বিজ্ঞানীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, পৃথিবীজুড়ে এখন জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প নিয়ে গবেষণা চলছে। আগামীতে এটি অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়াবে। এমন বাস্তবতা সামনে রেখে আমাদের তরুণ বিজ্ঞানীদেরও জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প নিয়ে কাজ করতে হবে।
প্রথম বুলেটিন

রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরে ‘অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ে আয়োজিত অংশীজন সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় তথ্য অধিকার আইন ও বিধি-বিধান সম্পর্কে জনসেচেতনতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হয়।
প্রথম বুলেটিন
মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, বিজ্ঞান জাদুঘরে শুধু বিজ্ঞানের ঐতিহাসিক প্রদর্শনীবস্তু থাকবে না। বিজ্ঞানের আধুনিক উদ্ভাবনও সেখানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পে যে মহাকর্মযজ্ঞ চলছে সেখানে যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে, তার ভিত্তিতে তরুণ বিজ্ঞানী ও শিক্ষার্থীদের সমসাময়িক ধারণা দেওয়ার জন্য জাদুঘরে পরমাণু বিজ্ঞান কর্নার স্থাপনও সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মহাপরিচালক আরও বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে তরুণ বিজ্ঞানীদের ধারণা দিতে বিজ্ঞান জাদুঘরকেন্দ্রিক জ্ঞানভাণ্ডার থাকবে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এ কাজে বিজ্ঞান জাদুঘরকে সহযোগিতা করতে পারে।
প্রথম বুলেটিন

সভায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজেদের অভিমত তুলে ধরেন। তারা বিজ্ঞান জাদুঘরের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে জাদুঘরে আরও কী কী থাকলে ভালো হয়, তা-ও তুলে ধরেন।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, পাঠ্যবইয়ের বাইরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর বিশাল এক জ্ঞানের জগৎ। এখানে বিজ্ঞান ও প্রকৃতির অপূর্ব সমন্বয় রয়েছে।
এদিকে, অংশীজন সভায় বক্তারা বিজ্ঞান জাদুঘরের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জনমনে ধারণা দিতে এর প্রচার কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া সার্বিক বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য কমিশনের পরিচালক
শেষবারের মতো ভর্তির সুযোগ পেলেন আরও ২২০০ শিক্ষার্থী
গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাঁকা থাকা প্রায় ২ হাজার ২০০ আসনে শেষবারের মতো চূড়ান্ত ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ভর্তিচ্ছুরা। রোববার (৮ অক্টোবর) এ ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম চলবে। এরপর আর ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে না। থাকবে না মাইগ্রেশনও।
গুচ্ছ ভর্তির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চম ধাপে চূড়ান্ত ভর্তি শুরু হয়েছে। ৮ ও ৯ অক্টোবর প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ভর্তির কাজ করতে পারবেন। শিক্ষার্থীর জন্য নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল কাগজপত্র জমা দেওয়াসহ ভর্তি ফি দিয়ে চূড়ান্ত ভর্তি সম্পন্ন করতে হবে।
প্রথম বুলেটিন
এতে আরও বলা হয়, যারা গত ৬ অক্টোবর প্রাথমিক ভর্তি ফি বাবদ ৫ হাজার টাকা অনলাইনে পরিশোধ করেছেন, তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মূল কাগজপত্র জমা দিতে না পারলে ভর্তি বাতিল বলে গণ্য হবে।
আরও পড়ুন>> গুচ্ছের ফাঁকা আসনে ভর্তিতে আগ্রহীদের ‘সম্মতি’ দেওয়ার নির্দেশ
বিজ্ঞাপন
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ ধাপে ভর্তি সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য পেতে নির্ধারিত ওয়েবসাইর্ট অনুসরণের নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, গত ২১ আগস্ট গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও ফি জমার শেষদিন ছিল। ২২ আগস্ট মূল কাগজপত্র জমা নেওয়া হয়। এরপর সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষের ক্লাসও শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
তবে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ক্লাস চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ২ হাজার ২০০ আসন ফাঁকা ছিল। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে অবশেষে ‘বিশেষ ধাপ’ উল্লেখ করে চলতি বছর শেষবারের মতো শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দিচ্ছে গুচ্ছ ভর্তি কমিটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *