পুঠিয়া-দুর্গাপুরে ঝিমিয়ে পড়া আওয়ামী লীগকে উজ্জীবিত করেছেন আব্দুল ওয়াদুদ দারা
রহিদুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহীঃ রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পুঠিয়া-দুর্গাপুরের সাবেক সফল সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা শোকের মাস আগস্ট জুড়েই পুঠিয়া-দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগের সম্ভব্য প্রার্থীগুলোর মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন তিনি।
পুরো আগস্ট মাস জুড়েই ছিলো তার রাজনৈতিক তদপরতা। পুঠিয়া-দুর্গাপুরে ঝিমিয়ে পড়া আওয়ামী লীগকে উজ্জীবিত করেছেন আব্দুল ওয়াদুদ দারা। এমনটাই মনে করছেন সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা।
ইতোমধ্যে রাজশাহী-৫(পুঠিয়া-দুর্গাপুর)এই আসনের তেরোটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার প্রায় সবকটিতেই আব্দুল ওয়াদুদ দারার নেতৃত্ব জাতীয় শোক দিবস ও ২১ আগস্ট উপলক্ষ্যে মাসব্যাপি স্মরণ সভা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সর্বশেষ ৩১ আগস্ট দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও শোক দিবস স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দুর্গাপুর উপজেলা সদর পানি উন্নয়ন বোর্ড এর মাঠ যা ধানহাট নামেও পরিচিত। এই মাঠে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আব্দুল ওয়াদুদ দারা।
বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দ। সভায় দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হকসহ অন্যান্য আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, আমরা কাউকে দোষ দিই না। আওয়ামী লীগ একটি ক্ষমার দল, মানবতার রাজনৈতিক দল৷ তবে আমাদের আপসোস, এমন একজন এমপি আমরা পুঠিয়া-দুর্গাপুরে পেয়েছি। তিনি উন্নয়ন করতে জানেন না, দলের মানুষ চিনেন না। রাজনৈতিক ভাবে জাতীয় দিবস গুলো পালন করতে জানেন না। আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা এখানে উপস্থিত আছেন, আপনাদের অনুরোধ রইল, আপনারা খোঁজ নিবেন, বর্তমান এমপির ইউনিয়নে দলীয়ভাবে কোথাও শোক দিবস পালন হয়নি।
তাই আমরা আগস্ট মাস জুড়ে আব্দুল ওয়াদুদ দারার নেতৃত্বে পুঠিয়া-দুর্গাপুরের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে জাতীয় শোক দিবস পালন করেছি।
পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে জোর দাবিতে জানিয়ে যাচ্ছি। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৫ আসনে আওয়ামী লীগ বাঁচাতে হলে, জনগণকে আওয়ামী লীগের সেবা পৌঁছে দিতে, তৃণমূল আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করতে এ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারার কোনো বিকল্প নেই। আমরা তাকেই নৌকার মাঝি হিসাবে চাই।
শোকসভাগুলো থেকে সরেজমিনে যা উঠে এসেছে, বর্তমান সংসদ সদস্যর নিজ ইউনিয়ন দুর্গাপুর উপজেলার কিসমত গনকৈড়। সেই ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি আড়ইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম রফিক ও দুর্গাপুরে এক আওয়ামী লীগ নেতা এবং পুঠিয়াতে দুজন বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা ছাড়া তিনি কাউকে চিনেন না । তবে কিছু চিনেন, তারা হলো- বিএনপি-জামাতের মানুষ আর এমপি সাহেবের আত্মীয়স্বজন।
শোক সভা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আরো বলেছেন – পৌনে পাঁচ বছরে পুঠিয়া-দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগকে মামলা হামলা করে বর্তমান সংসদ সদস্য প্রফেসর ডাঃ মনসুর রহমান আওয়ামী লীগকে ধ্বংসত্বপে পরিনত করেছেন।
পুঠিয়া-দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগকে উজ্জীবিত করতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক দুইবারের সফল সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারার নেতৃত্বে আগস্ট মাস জুড়ে শোক সভা করেছি। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত ঘরের সাবেক ছাত্রনেতা। একাত্তর পরবর্তী সময় হতে তিনি আমাদের মাঝে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে জনগণের পাশে রয়েছে।
আব্দুল ওয়াদুদ দারা, এমপি না হয়েও দিনরাত রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের পাশে রয়েছেন বলেও দাবি করেছেন প্রবিণ ও তরুণ ছাত্রনেতারা।
দুর্গাপুর উপজেলার কিসমত গনকৈড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আকবর আলী জানান, গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা আব্দুল ওয়াদুদ দারা এমপিকে বাদ দিয়ে প্রফেসর ডাঃ মনসুর রহমানকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন। আমরা তাকে নৌকায় ভোট দিয়ে এমপি নির্বাচিত করেছি।
কিন্তু মনোনয়ন পাওয়ার আগে আমরা তাকে ডাক্তার হিসাবে জানতাম। কারন একই ইউনিয়নে তার বাড়ি। আমরা কখনও তাকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা আওয়ামী লীগ করতে দেখিনি।
তবুও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা ও সম্মান রেখে ডাঃ মনসুর রহমানকে নৌকায় ভোট দিয়ে এমপি বানিয়েছি। তবে তিনি এমপি হওয়ার পরে জামায়াত বিএনপি ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী চিনেন না। তিনি জাতীয় দিবসগুলো ঠিকমত পালন করেন না। আমরা এ ধরনের আওয়ামী লীগ ধ্বংসকারী এমপির পরিবর্তন চাই এবং সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারাকে নৌকার মনোনয়ন দেয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
সাবেক উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি প্রভাষক আলিফ জানান, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে আওয়ামী লীগ রক্ষা করতে হলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারার কোনো বিকল্প নাই।
কিসমত গনকৈড় ইউনিয়ন আওয়ামী সভাপতি নুর মোহাম্মদ জানান- নৌকা যে আনবে তার পক্ষেই আমরা কাজ করবো, তবে দারা সাহেব সাংগঠনিক মানুষ।
একই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রহিদুল ইসলাম জানান, এমপি সাহেব তো আত্মীয় ছাড়া কাউকে চিনেন না। আর উন্নয়ন কতটুকু হইছে তা পুঠিয়া-দুর্গাপুর বাসি জানেন। আমার নিজ গ্রাম কিসমত গনকৈড়। এই গ্রামের দুইদিকে সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা সাহেব রাস্তা পাকা করেছেন। মাঝখানে সাড়ে ৪শ মিটার রাস্তা কাচা রয়েছে। পৌনে পাঁচ বছরে বহুবার এমপি ডাঃ মনসুর রহমানের কাছে রাস্তা বিষয়ে ধর্না দিয়েছি। রাস্তার নম্বর করে সেই নম্বর আরো আওয়ামী লীগ নেতাসহ তাকে দিয়েছি। আজও কোনো কাজ হয়নি। অথচ এই গ্রামর বিএনপির অনেক মানুষ আমার সাথে গিয়ে তাকে ভোট দিয়েছেন। আমরা এমন এমপির পরিবর্তন চাই।
নওপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্কাছ আলী জানান, বর্তমান এমপির পৌনে পাঁচ বছরে পুঠিয়া-দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগ হারিয়ে ছিলো। জননেতা সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা পুনরায় এই আগস্ট মাসে প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়নে শোকসভার মধ্যে দিয়ে আওয়ামী প্রাণ খুজে পাইছে। আমরা এমন এমপির পরিবর্তন চাই এই আসনে। সেই সাথে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারাকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে নৌকার মনোনয়ন দেয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে জোর দাবি জানায়।
তাং ১/৯/২৩
রাজশাহী